জামালপুরে গরু খামারিদের নিয়ে রি-কল প্রকল্পের জেলা পর্যায়ে কর্মশালা

জামালপুরে গরু খামারিদের নিয়ে উন্নয়ন সংঘের রি-কল প্রকল্পের কর্মশালা। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম

নারীদের বাজারে অভিগম্যতা, পণ্যের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি এবং নারীর অথনৈতিক নেতৃত্বায়নের জন্য রি-কল প্রকল্পের ডেইরি ভ্যালু চেইন ও ডেইররি মার্কেট সিস্টেম কার্যক্রমের আওতায় বাংলাদেশের দুর্গম চরাঞ্চলের ক্ষুদ্র ডেইরি খামারির দক্ষতা বৃদ্ধি, পণ্যের উৎপাদন ও গুণগত মান বৃদ্ধি মূলধারার বাজারের সাথে সংযোগ স্থাপন, সরকারি সেবা সমূহের আওতাভূক্তকরণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানোর মাধ্যমে নারীর অথনৈতিক মুক্তি ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা সৃষ্টির লক্ষ্যে জামালপুরে গরু খামারিদের নিয়ে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের জেলা কর্মকর্তা চিকিৎসক নুরুল ইসলাম।

উন্নয়ন সংঘের রি-কল ২০২১ প্রকল্পের আওতায় সংস্থার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ডিটিআরসিতে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উন্নয়ন সংঘের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল আলম মোল্লা। কর্মশালায় অন্যান্যের মাঝে আলোচনায় অংশ নেন জেলা বাজার বিষয়ক কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাবিল উদ্দিন, প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালক চিকিৎসক সুবাস চন্দ্র পন্ডিত, ভেটেনারি সার্জন চিকিৎসক মোহাম্মদ আলী, উন্নয়ন সংঘের রি-কল প্রকল্পের সমন্বয়কারী জ্যোৎস্না আক্তার প্রমুখ।

অক্সফ্যাম এর আর্থিক সহায়তায় উন্নয়ন সংঘ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের উপস্থাপিত ধারণাপত্র থেকে জানা যায়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাধাসমূহ চিহ্নিত করে র‌্যাপিড কেয়ার এনালাইসিস টুলস প্রয়োগের মাধ্যমে নারীদের গৃহস্থালীর যত্নাদি ও অনুৎপাদনমূলক কাজের সম্পৃক্ততা কমিয়ে উৎপাদনশীল ও আয়বর্ধকমূলক কাজে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যা বাংলাদেশের অথনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর অংশীদারিত্ব উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করছে।

এছাড়াও নারী উদ্যোক্তা তৈরি ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যবসা শিক্ষণ ও বাণিজ্য পরিচালনা, প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহে নারী উদ্যোক্তাদের সামাজিক ও অথনৈতিক বাধাসমূহ চিহ্নিত করে এবং এর উত্তরণে/সমাধানে সহায়তা দিচ্ছে।

উদ্যোক্তার পাশাপাশি একজন নারী আরো অনেক ধরনের অথনৈতিক কাজের সাথে জড়িত যেমন, দিনমজুর , গৃহকর্মী, নার্সিং পশু ও পাখি পালনসহ নিজস্ব ভোগের জন্য উৎপাদনমূলক কাজ। এছাড়া সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সাথে নারীরা জড়িত যেমন, এলাকার উন্নয়নে বিভিন্ন কমিটির সদস্য হওয়া, প্রতিবেশীদের সাহায্য করা , স্বাস্থ্যসেবা প্রদান , সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ এবং গৃহস্থালীর সেবামূলক কাজ ইত্যাদি।

ইমপ্রুভিং দ্যা ডেইরি সেক্টর এন্ড প্রমোটিং সাসটাইনেবল এনারজি ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের মাধ্যমে অক্সফ্যাম চরাঞ্চলের প্রায় ২ হাজার ক্ষুদ্র নারী দুগ্ধ খামারি (ডেইরি এন্টারপ্রাইজ) কে মূলধারার আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান (বেসরকারি ও রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাংক) থেকে ঋণগ্রহণপূর্বক তাদের খামারের পরিসর বৃদ্ধি করে দুধের উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধি নিশ্চিত করবে এবং বায়োগ্যাস স্থাপনের মাধ্যমে বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করে গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমিয়ে ও রিনিউয়েবল এর্নাজি উৎপাদনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব থেকে প্রকৃতিকে রক্ষা করবে। এছাড়াও বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও বায়োগ্যাস নারীদের গৃহস্থালীর কাজের চাপ কমানোর পাশাপাশি নারী ও শিশুর রেসপাইরেটরি ডিজিজের প্রকোপ কমিয়ে তাদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এই প্রকল্প প্রাইভেট সেক্টরের সাথে পার্টনারশিপের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি উন্নয়ন কাজে প্রাইভেট সেক্টরের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে। ফলে এই প্রকল্প টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ১, ২, ৩ , ৪, ৫, ৭, ৮, ১০, ১২, ১৩, ১৫ এর পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ১৭ তেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।