ধানুয়া কামালপুরে যৌন হয়রানির অভিযোগে এক শিক্ষক আটক

বকশীগঞ্জে ছাত্রী উত্যক্তকারী শিক্ষক মো. আরিফুর রহমান। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর ও বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে উপজেলার ধানুয়া কামালপুর কো-অপারেটিভ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আরিফুর রহমানকে পুলিশ আটক করেছে। ১৮ এপ্রিল সকালে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাশ বর্জন করে আন্দোলন করেছে। বিকেলে ওই শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করবেন বলে বকশীগঞ্জ থানার ওসি জানিয়েছেন।

বিদ্যালয়, ওই শিক্ষার্থীর পরিবার ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ধানুয়া কামালপুর কো-অপারেটিভ উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আরিফুর রহমানের বাড়ি পাশের শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলায়। তিনি বছর দুয়েক আগে বিদ্যালয়টিতে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ওই বিদ্যালয়ের পেছনেই স্থানীয় টিক্কা মিয়ার বাসা ভাড়া নিয়ে একাই ওই বাসায় থাকতেন এবং শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতেন।

অভিযোগকারী স্থানীয় মাঝগেদরা গ্রামের কৃষককন্যা দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীও তার কাছে ইংরেজি প্রাইভেট পড়তো। প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সুযোগে ওই ছাত্রীর ওপর তার কুনজর পড়ে। প্রাইভেট পড়ার সময় প্রলোভন দেখানো, তার ব্যক্তিগত কক্ষে যেতে বলা এবং ব্যাচে পড়া শেষে তাকে একা আরও পড়ানোর কথা বলে কিছুক্ষণ থাকতে বলাসহ নানাভাবে তাকে যৌন হয়রানি করে আসছিলেন। সর্বশেষ পহেলা বৈশাখে তিনি ওই ছাত্রীর মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে উত্যক্ত করেন। এতে করে ওই শিক্ষার্থী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। উত্যক্ত করার বিষয়টি ওই ছাত্রী তার বাবা-মায়ের কাছে খুলে বলে।

বিষয়টি জানাজানি হলে ১৮ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে ক্লাশ বর্জন করে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এর সাথে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও যুক্ত হয়ে শিক্ষক আরিফুর রহমানকে অপসারণসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

খবর পেয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেওয়ান মো. তাজুল ইসলাম বেলা দেড়টার দিকে ধানুয়া কামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক মো. ফরহাদ হোসেন, যৌন হয়রানিকারী ওই শিক্ষক আরিফুর রহমান এবং ওই ছাত্রী ও তার বাবা-মায়ের সাথে কথা বলেন। পরে তার নির্দেশে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে আটক করে।

ইউএনও দেওয়ান মো. তাজুল ইসলাম বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘আমি ঘটনা শুনেই ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে ওই ছাত্রীর কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত শুনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসি। দেখলাম যে মেয়েটি যেসব কথা বলছে, ওই শিক্ষক সম্পর্কে আমার মনে হয়েছে ঘটনাটি আরও অধিক তদন্ত হওয়া দরকার। তাই ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের মামলা দায়ের করার পরামর্শ দিয়েছি।’

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মাহবুব আলম বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক মো. আরিফুর রহমানকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। ওই ছাত্রীর মা মামলাটির বাদী হচ্ছেন। আরিফুর রহমানকে থানা হাজতে আটক রাখা হয়েছে।’