মেলান্দহে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আটক ৫

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠি ডটকম

জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছেন। ১০ ডিসেম্বর দুপুরে মেলান্দহ উপজেলার দুরমুঠ ইউনিয়নের দুরমুঠ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ দুরমুঠ এলাকা থেকে বিএনপি প্রার্থীর সমর্থক পাঁচজন নেতাকর্মীকে আটক করেছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এ ঘটনার জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর ১০ ডিসেম্বর দুপুরে জামালপুর থেকে মোটরসাইকেলের বহরে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে মেলান্দহ উপজেলার দুরমুঠ ইউনিয়নের দুরমুঠ বাজারে হযরত শাহ কামালের (রহ:) মাজার জিয়ারত করার জন্য বের হন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তাদের বহরটি দুরমুঠ বাজারে ঢুকতেই এ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের সমর্থক স্থানীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা নৌকা প্রতীকের স্লোগান ধরে মোটরসাইকেলের বহরে বাঁধা দেয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৭ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থক সাতজনের মধ্যে মেলান্দহ উপজেলা ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক রুহিত আমীর, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মিলন, দুরমুঠ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এস এম ইমরান ও সাধারণ সম্পাদক হোসেন আলী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সদস্য তৌহিদুর রহমান পান্থকে জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ হামলার ঘটনায় বিএনপির প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলের সমর্থক অন্তত ১০জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এ নিয়ে সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় মেলান্দহ থানা পুলিশ বিএনপি প্রার্থীর সমর্থক পাঁচজন দলীয় নেতাকর্মীকে আটক করেছে। আটক নেতাকর্মীরা হলেন দুরমুঠ ইউনিয়ন বিএনপিনেতা মো. সাহেব আলী ও জিয়াউল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের যুগ্মআহ্বায়ক হযরত আলী আন্না, রুখনাই ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মো. আলমগীর হোসেন ও দুরমুঠ ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য মোতালেব হোসেন। তাদের মুক্তির দাবিতে বিএনপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বেশকিছু নেতাকর্মীদের নিয়ে মেলান্দহ থানার সামনে মাটিতে বসে অবস্থান নেন। পরে থানার ওসি বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দিলে নেতাকর্মীরা শান্ত হন।

বিএনপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল এ হামলা প্রসঙ্গে বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, বিএনপির গণজোয়ারে ঈর্শান্বিত হয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গায়েপড়ে ঝগড়া করার জন্য এ হামলা হামলা করেছে। এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা না হলেও পুলিশ আমাদের দলের পাঁচজন নেতাকর্মীকে আটক করেছে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে আমি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করে নির্বাচনী লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট করার অভিযোগ করেছি।

অপরদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থক দুরমুঠ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ খালেকুজ্জামান জুবেরী অভিযোগ অস্বীকার করে বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, আমি এবং আমার ছেলেসহ যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী হেটে আমার বাসার দিকে যাচ্ছি। এমন সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের কয়েক শ’ মোটরসাইকেলের বহর থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর তারাই হামলা চালিয়ে এখন তারা মিথ্যাচার করছে। আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা এবং নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হবে।

এদিকে মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মো. সাখাওয়াত হোসেন বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, দুরমুঠে দুই দলের মধ্যে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুরমুঠ এলাকা থেকে পাঁচজন বিএনপি সমর্থককে আটক করা হয়েছে। দুরমুঠে হামলার ঘটনায় কোনো পক্ষই থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।