যমুনা সার কারখানায় ইউরিয়া উৎপাদন শুরু

যমুনা সার কারখানা। ছবি : বাংলার চিঠি ডটকম

মমিনুল ইসলাম কিসমত, সরিষাবাড়ী ॥
দেশের সর্ববৃহৎ ও দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অবস্থিত যমুনা সার কারখানায় (জেএফসিএল) অবশেষে উৎপাদন শুরু হয়েছে। দীর্ঘ পাঁচমাস বন্ধ থাকার পর ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা থেকে ইউরিয়া উৎপাদন চালু হয়। এরআগে ১০ সেপ্টেম্বর কারখানায় গ্যাস সংযোগ দেয় তিতাস গ্যাস কোম্পানি।

জেএফসিএল সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প প্রতিষ্ঠান কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রানাধীন কেপিআই-১ মানসম্পন্ন যমুনা সার কারখানা ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই গ্যাস সরবরাহ করে আসছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড কোম্পানি। দৈনিক ১৭০০ মে. টন ইউরিয়া উৎপাদনে সক্ষম এ কারখানায় প্রতিদিন গড়ে ৩৭০ পিএসআই চাপ গ্যাস প্রয়োজন। কয়েক বছর ধরে কারখানায় গ্যাস স্বল্পতায় ইউরিয়া উৎপাদন থেমে থেমে চলে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যাঘাত ঘটে। এদিকে সরকারি সিদ্ধান্তে চলতি বছরের ৫ই এপ্রিল যমুনা সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তিতাস কোং। এতে ইউরিয়া উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ে। এলাকাবাসীর দাবির মুখে ১০ সেপ্টেম্বর গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়। পরে রবিবার থেকে ইউরিয়া উৎপাদন শুরু করতে সক্ষম হয় কর্তৃপক্ষ।

জেএফসিএল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী বলেন, যমুনা সার কারখানা বিশাল এলাকার অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি। দীর্ঘদিন এ কারখানা সরকার বন্ধ রাখায় শ্রমিকসহ নিম্নআয়ের লোকজন বেকার হয়ে পড়ে। বিশেষ করে একমাত্র কারখানার আয়ের উপর নির্ভরশীল কয়েক হাজার কুলি-মজুর, ট্রাক চালক ও দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকরা মানবেতর জীবন-যাপন করে আসছিল। এলাকাবাসীর বারবার আন্দোলনের মুখে অবশেষে উৎপাদন চালু হওয়ায় সবার মুখে হাসি ফুঠেছে।

এ ব্যাপারে কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আ.ন.ম. শরিফুল ইসলাম বাংলার চিঠি ডটকমকে বলেন, বর্তমানে স্বাভাবিক মাত্রায় ২০ কে.জি. চাপে গ্যাস সরবরাহ রয়েছে। গ্যাসের চাপ ঠিক থাকলে ইউরিয়া উৎপাদন অব্যাহতভাবে চলবে।

এ ব্যাপারে যমুনা সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবা সুলতানা বাংলার চিঠি ডটকমকে বলেন, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকার কারণে এতোদিন আমদানিনির্ভর সার দিয়ে কৃষকদের চাহিদা মেটানো হয়েছে। কারখানার আওতাভুক্তা টাঙ্গাইল, শেরপুর ও জামালপুর জেলায় কৃষকদের মাঝে বিতরণের জন্য চলতি মাসে ১৯ হাজার ৮৮৪ মেট্রিক টন সারের চাহিদা রয়েছে। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে কারখানার উৎপাদিত ইউরিয়া সার দিয়েই ডিলার ও কৃষকদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।