হাওয়া ভবনে বসেই শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল : প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম

সভায় বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। ছবি : বাংলার চিঠি ডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর॥
বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেছেন, ‘হাওয়া ভবনে বসেই শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তারেক রহমানের হাওয়া ভবনের সেই ষড়যন্ত্র খালেদা জিয়াও জানতেন। জঙ্গি মুফতি হান্নানকে হাওয়া ভবনে ডেকে নিয়ে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা করে তারা। শুধু হামলাই নয়, সেখান থেকে তাদেরকে পালিয়ে যাওয়ারও সুযোগ করে দিয়েছিল তখনকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সব নেতাদের হত্যা করে তারা ৫০ বছর ক্ষমতায় থাকার পরিকল্পনা করেছিল।’

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এসব কথা বলেন। ২১ আগস্ট রাতে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শহরের বকুলতলায় দলীয় কার্যালয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।

প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র কেবল তারেক রহমানের দ্বারাই সম্ভব। কারণ তার পিতা জিয়াউর রহমানও পঁচাত্তুরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করেছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় সৌভাগ্যক্রমে তারা বেঁচে যান। ঠিক একইভাবে তারেক রহমানও জঙ্গি মুফতি হান্নানকে দিয়ে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে ১১টি গ্রেনেড হামলা করেছিল। সেই ঘটনায় আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হলেও জনগণের আশীর্বাদে শেখ হাসিনা সেদিন রক্ষা পান।’

মির্জা আজম আরো বলেন, ‘বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা এবং ২৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনার কোনো বিচার হয়নি। তখন ওই ঘটনায় থানায় কোনো মামলাও করতে দেয়নি। আজকে মুফতি হান্নানের আদালতে দেওয়া স্বীকারুক্তিতে সব সত্য বেরিয়ে এসেছে, কারা ওই নারকীয় ঘটনার সাথে জড়িত ছিল। আমি বিশ্বাস করি খুব শিগগির ওই মামলাটির রায় হবে।’

বিএনপি আবারও ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, ‘শেখ হাসিনা হলেন বাংলাদেশের গণমানুষের আশীর্বাদ। শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় ঈর্শান্বিত হয়ে বিএনপি আবারও দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের দশ বছর আগেই ইউরোপ-আমেরিকার মতো উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে বাংলাদেশ। তিনি সকল প্রকার ষড়যন্ত্র রুখে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনতে শেখ হাসিনা যেমন সাহসী, শেখ হাসিনার কর্মী হিসেবে সাহসের সাথে জীবনবাজি রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে আসছে নির্বাচনে প্রতিটি আসনে নৌকা প্রতীকের বিজয়ের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিম হীরা, দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সালেহ সফি গেন্দা, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল আমীন চান, জামালপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ, জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহা রাজু ও সাধারণ সম্পাদক ফারহান আহমেদ, শহর মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্মআহ্বায়ক মুনিরা চৌধুরী, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিহাদুল আলম নিহাদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সৈয়দ তানভীর আহাম্মেদ, জেলা যুব মহিলালীগের যুগ্মআহ্বায়ক নাজনিন আক্তার রুমী প্রমুখ।

পরে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিম হীরা।