সরিষাবাড়ীতে চার শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখম করলেন প্রধান শিক্ষিকা

পঞ্চাশী উচ্চ বিদ্যালয়। ছবি : বাংলার চিঠি ডটকম

মমিনুল ইসলাম কিসমত, সরিষাবাড়ী ॥
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের বেতের আঘাতে জখম হয়েছে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া চারজন শিক্ষার্থী। উপজেলার আওনা ইউনিয়নের পঞ্চাশী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ আগস্ট সকালে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে শিক্ষার্থীরা গুরুতর আহত হলেও তাদের হাসপাতালে ভর্তি না হতে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শিক্ষার্থী ও তাদের পারিবারিক সূত্র জানায়, ৬ আগস্ট সকালে পঞ্চাশী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী কামনা ইয়াসমিন কথার পিঠে কিছু ব্যাঙ্গাত্মক শব্দ লিখে চুইংগাম দিয়ে লাগিয়ে দেয় একই শ্রেণিতে পড়ুয়া মিম খাতুন। এ নিয়ে কামনা ইয়াসমিন কথা শ্রেণিকক্ষে কান্নাকাটি করে। পরে মিম খাতুনের গায়েও কামনা ইয়াসমিন ও অপর সহপাঠী কণিকা আক্তার ব্যাঙ্গাত্মক শব্দ লিখে লাগায়। এ নিয়ে শ্রেণিকক্ষে হই-হুল্লোড় সৃষ্টি হলে বিষয়টি প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসী খাতুন বিথীর কাছে শিক্ষার্থীরা বিচার দেয়।

৭ আগস্ট সকালে প্রথম পিরিয়ড (ইংরেজি) চলাকালে প্রধান শিক্ষিকা ওই শিক্ষার্থীদের বিচার করার জন্য নবম শ্রেণিতে ঢুকেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা একে অপরের ওপর দোষ চাপাতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা ক্ষিপ্ত হয়ে বেত দিয়ে তাদের বেধড়ক পেটাতে থাকেন। এতে শিক্ষার্থী মিম খাতুন, কামনা ইয়াসমিন কথা, কণিকা আক্তার ও রূপা আক্তার আহত হয়।

শিক্ষার্থী কামনা ইয়াসমিন বলে, ‘প্রথম পিরিয়ডে পিটিয়ে চলে যাওয়ার পর প্রধান শিক্ষিকা দ্বিতীয় পিরিয়ডে অংকের ক্লাশ নিতে আসলে আমরা অজ্ঞান হয়ে যাই।’ তার বাবা আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করেন, ‘আমার মেয়ে দিনে চারবার অজ্ঞান হয়ে পড়ে। সে গুরুতর আহত হলেও হাসপাতালে ভর্তি না হতে প্রধান শিক্ষিকা ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।’

এ ব্যাপারে পঞ্চাশী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসী খাতুন বিথী বলেন, ‘বিষয়টি তেমন কিছু নয়। দুইজন ছাত্রী দুষ্টুমি করেছিল, তাই হালকা বেতের বাড়ি দিয়েছি।’

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাপ হোসেন বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কোনো কিছুই জানি না। আমি খোঁজ নিচ্ছি।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফিরোজ আল মামুন বলেন, ‘অভিযোগটি সত্য হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’