জামালপুরের জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম বলেছেন, শিশু এবং কিশোর-কিশোরীরাই হল একটা জাতির মূল মেরুদণ্ড। তাদের সুস্থতা নিশ্চিত করাই হচ্ছে দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিকে সুসংহত করার শামিল। একটি সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তোলার জন্য টিকাদান কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টাইফয়েড হল সংক্রামত রোগ। একজনের দেহ থেকে আরেকজনে সংক্রমিত হয়। ছড়িয়ে পড়ে আরও অনেকজনে। এই রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিনের বিকল্প কোন কিছুই নেই।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের শিশু-কিশোর ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫ উপলক্ষ্যে সাংবাদিকদের নিয়ে জামালপুর জেলা তথ্য অফিস আয়োজিত ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক। ইউনিসেফের সহযোগিতায় ৩০ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সভাকক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সরকার বিনামূল্যে সারাদেশে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের টাইয়ফয়েডের টিকাদান কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এটি একটি নতুন উদ্যোগ। অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। সরকারের স্বাস্থ্যবিভাগের এই উদ্যোগকে সফল করার জন্য ইতিবাচক দিক বিবেচনা করে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারের মাধ্যমে সারা জেলায় সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়াসহ সাংবাদিকদের প্রতি সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইফতেখার ইউনুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার সৈয়দ মো. রফিকুল ইসলাম পিপিএম-সেবা ও সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ আজিজুল হক।
এছাড়াও গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রচার ও পরিপত্র) ডালিয়া ইয়াসমিন অনলাইনে ভারচুয়ালি যুক্ত হয়ে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি বিষয়ে সাংবাদিকদের ধারণা দেন এবং সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
মুক্ত আলোচনা পর্বে এই টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ আজিজুল হক ও তার কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মোবাশ্বিরা হক।
এ সময় সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করেন। তিনি প্রতিটি শিশুর টিকা নিশ্চিত করার জন্য নির্ধারিত ওয়েব সাইটে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের নাম নিবন্ধনের নিয়ম-কানুন তুলে ধরেন ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে।
এছাড়াও তিনি জানান, টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনের আওতায় জামালপুর জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কমিউনিটি পর্যায়ে জেলায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী ছয় লাখ ৩৫ হাজার ৩২২ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত অনলাইনে এক লাখ ৪৭ হাজার ৭৩৩ জনের বেশি নিবন্ধন করা হয়েছে। ১২ অক্টোবর থেকে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে টিকা দেওয়া শুরু হবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে এ বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে, যাতে অভিভাবকেরা সময়মত তাদের সন্তানদের টিকা দিতে উৎসাহিত হন। এই ক্যাম্পেইন চলাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি/সমমান পর্যন্ত সকল ছাত্র-ছাত্রীকে ১২ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত টিকাদান করা হবে। অপরদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কমিউনিটির ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি সকল শিশুকে ১ নভেম্বর থেকে টিকাদান করা হবে।
কর্মশালায় জেলার প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অংশ নেন।