জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চরআমখাওয়া ইউনিয়নের লঙ্কারচর সকাল বাজারে আমানত আলী ও তার স্বজনদের পাঁচটি আধাপাকা দোকানঘর ভাংচুর, লুটপাট ও মালামালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করার ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী আমানত আলী। ২২ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় জামালপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে আমানত আলী বলেন, লংকারচর সকাল বাজারে আমার এবং আমার ভাই-বোনদের ১২৯ নম্বর বিআরএস খতিয়ানভুক্ত ৫১৬ ও ৫১৭ নম্বর দাগের ১৬ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছি। ওই জমিতে পাঁচটি আধাপাকা দোকানঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছি। ভাড়াটেরা মুদি দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান দিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন।
এলাকার কতিপয় লাঠিয়াল বাহিনীর লোকজন প্রথমে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না পেয়ে তারা কথিত রাস্তা তৈরির নাম করে আমাদের জমি ও বাবসা প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা শুরু করেন। তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছি। মামলা দায়েরের বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিপক্ষের লোকজন আরও বেশি মরিয়া হয়ে উঠেন।

তিনি আরও বলেন, ২০ জানুয়ারি সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে চরআমখাওয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা শামসুল হকের নেতৃত্বে দক্ষিণ লঙ্কারচর গ্রামের মো. হাসান আলী, মো. সাহার আলী নাদু, মো. জসমত আলীসহ তাদের সহযোগীরা সংঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের জমিতে আসেন। এ সময় তারা এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে পাঁচটি দোকান ভাংচুর, দোকানের সব মালামাল এবং দোকানপাটের টিন, সিমেন্টের খুঁটি, কাঠ সবকিছু লুট করে নিয়ে যায়। এতে অন্তত ৫০ লাখ টাকার মালামাল এবং পাঁচ লাখ টাকার আসবাবপত্র তারা লুটপাট করেছে। এ ছাড়াও আরও কয়েক লাখ টাকার মালামালের ক্ষতি করেছে।
ঘটনার সময় স্থানীয় সানন্দবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ফোনে বিষয়টি জানানো হলেও তারা কোন সাড়া দেননি। পরে ঘটনাটি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে দেওয়ানগঞ্জ থানার ওসিকেও জানানো হয়। ২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার দেওয়ানগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করার পরেও পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
আমানত আলী আরও বলেন, আমাদের জমি জবরদখল, দোকানপাট ভাংচুর লুটপাট করে অন্তত ৫৫ লাখ টাকার ক্ষতি করার পরেও হামলাকারীরা আমাদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। হাট-বাজারেও যেতে দিচ্ছে না। আমাদের অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়িতে হামলা ও লুটপাটের হুমকি দিচ্ছে তারা। বর্তমানে সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও তাদের প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
ভুক্তভোগী আমানত আলীর ভাতিজা ইউনুছ আলীও সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।