শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস সোহেল রানা (১৯) হত্যা মামলার তদন্তে পাওয়া তিনজন আসামিকে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার কানাপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ও র্যাব-৫, সিপিএসসি, রাজশাহী। ১৮ নভেম্বর রাতে এ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
র্যাবের জামালপুর ক্যাম্পের অপারেশনস ও মিডিয়া কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. নাজমুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, নিহত সোহেল রানা (১৯) রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার চর আমতলা গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের ছেলে। সোহেল রানা বিগত প্রায় চার বছর আগে তার পরিবারের সাথে রাগ করে অবৈধ পথে ভারত চলে যায়। সেখানেই তিনি অবৈধভাবে বসবাস করেন। ভারতে চলে যাওয়ার পর থেকে সোহেল রানা তার পরিবারের সাথে কোন যোগাযোগ রাখেন নাই।
গত ১৮ অক্টোবর তিনি তার মায়ের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে জানান যে, তিনি ভারত থেকে বাংলাদেশে আসবেন। কিন্তু ২১ অক্টোবর সকাল অনুমান ৭টার দিকে এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মোবাইল নম্বর থেকে সোহেল রানাদের গ্রামের মৃত আছর উদ্দিনের ছেলে বাবুর (৩৫) মোবাইলে ফোন করে জানান যে, সোহেল রানার রক্তাক্ত মরদেহ শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার আন্ধারপাড়া এলাকার হাতিটিলা দুই পাহাড়ের মাঝখানে পড়ে আছে।
খবর পেয়ে সোহেল রানার চাচা টুটুল মিয়াসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সোহেল রানাকে মৃত অবস্থায় শনাক্ত করেন। সংবাদ পেয়ে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত সোহেল রানার মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন লিখে ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ শেরপুর সদর হাসপাতালে পাঠান।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় ২০ অক্টোবর রাত অনুমান সাড়ে ১০টা থেকে ২১ অক্টোবর সকাল অনুমান ৭টার মধ্যে যেকোন সময় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত সোহেল রানার চাচা মো. টুটুল মিয়া বাদী হয়ে ১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় ২১ অক্টোবর শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর র্যাব-১৪ সিপিসি-১ জামালপুর কোম্পানি ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্ত চলাকালে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করে র্যাব।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মামলাটির আসামিরা গ্রেপ্তার এড়াতে ঘটনার পর পরই এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান।
র্যাব আরও জানায়, মামলাটির আসামিদের গ্রেপ্তারে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্প ও র্যাব-৫, সিপিএসসি রাজশাহী ক্যাম্পের যৌথ আভিযানিক দল ১৮ নভেম্বর রাতে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানের সময় রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার কানাপাড়া এলাকা থেকে হত্যা মামলার তদন্তে পাওয়া পলাতক আসামি সেখানকার চরকানাপাড়া গ্রামের মো. সানাউল হকের ছেলে মো. মোমিন ওরফে মিন্টু (২৭) ও মো. সাইদ মাসুম ওরফে বাবু (২২) এবং উত্তর কানাপাড়া গ্রামের কালামের ছেলে মো. নাজবুল হককে (২০) গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তার আসামিদের শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।