জাল দলিল তৈরি করে জামালপুর শহরের মেডিকেল রোডে হযরত আলী মার্কেটের একাংশের ভূমি আত্মসাতের অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে জামালপুর পৌর ভূমি অফিসের কর্মচারী শাহানা বেগম ও তার স্বামী রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে। ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুরে জামালপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে এ অভিযোগ করেন ওই ভূমির মালিক জিলহজ আলী নাদু। জিলহজ আলী নাদু হযরত আলী মার্কেটের প্রতিষ্ঠাতা মৃত হযরত আলীর ছেলে।
সাংবাদিক সম্মেলনে ভুক্তভোগী জিলহজ আলী নাদু লিখিত বক্তব্য রাখেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, একটি শক্তিশালী ভূমিদস্যুচক্র আমার পৈত্রিক সূত্রে ও দলিল মূলে প্রাপ্ত মালিকানাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। মুসলিমাবাদ এলাকার ভূমিদস্যু ও জামালপুর পৌর ভূমি অফিসের কর্মচারী শাহানা বেগম ও তার স্বামী রেজাউল করিম একটি ভূয়া দলিল সৃষ্টি করে আমার দখলীয় জামালপুর শহরের মেডিকেল রোডের হযরত আলী মার্কেটের শক্তি ঔষধালয় দোকান ঘরের সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে আসছে। যা সম্পূর্ণরূপে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও বানোয়াট।
তিনি বলেন, আমার বাবা হযরত আলীর নামে জামালপুর সদর উপজেলার সিংহজানী মৌজার সিএস খতিয়ান নং-৫৭৯, এসএ খতিয়ান নং-৪৭৪, বিআরএস খতিয়ান নং-৪১৮০ ভুক্ত সিএস দাগ নং-২০৪১, বিআরএস দাগ নং-৭৫৫০ নালিশি তফসিলভুক্ত সম্পত্তি। বিআরএস নম্বর ৪১৮০ খতিয়ানের ৭৫৫০ নম্বর দাগের ০৯৩৭ অযুতাংশ ভূমি আমার পিতা হযরত আলীর নামে। তার নামে বিআরএস রেকর্ডীয় ৪১৮০ নম্বর খতিয়ানের ভূমিতে ১৯৬৩ সাল থেকে অদ্যাবধি অর্থাৎ ৬০ বৎছরের অধিক সময় থেকে হযরত আলী ও আমার দখলে রয়েছে। শক্তি ঔষধালয়ের জামালপুর শাখায় দোকান ঘরটি হজরত আলী মার্কেটের দোকান ঘরটি হজরত আলীর সন্তান বা তার ওয়ারিশেরা কেউই এই সম্পত্তি বিক্রি করেন নাই।
তিনি বলেন, রাস্তাসহ ০.৯০ শতাংশ বা ৯০ পয়েন্ট ভূমিতে থাকা দোকান হজরত আলীর মৃত্যুর পর তার ছোট ছেলে জিলহজ আলী নাদুর সাথে বর্তমানে এগ্রিমেন্ট বা দোকান ঘর ভাড়াটিয়ার চুক্তিপত্র ২০৩১ সাল পর্যন্ত রয়েছে। শাহানা বেগম মিথ্যা প্রতারণার আশ্রয়ে জালিয়াতি করে ১২৯৪৫ নম্বর দলিল মূলে বিভিন্ন অন্যের দলিল সোনালী ব্যাংক, জামালপুর প্রধান শাখায় মর্টগেজ বন্ধকি দলিল ৬১৩৭ নম্বর দলিলটি ৮৪৮৩ ও ৮৩৮২ নম্বর মর্টগেজ দলিলে বর্তমানে রয়েছে।
এই ৬১৩৭ নম্বর দলিলটি খালাস (রিডেম্পশন) হয় নাই। ১৮৮২ সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে ৫৩(ডি) ধারায় বন্ধকি থাকলে পরবর্তী কোন দলিল হস্তান্তর হইলে পরবর্তীতে উক্ত দলিলগুলি বাতিল বলে গণ্য হবে। হজরত আলীর সন্তানদের দলিল প্রতারণা করে ১২৯৪৫ নম্বর দলিল সৃষ্টি করেছে। যেভাবে দাতা দিলদার আলী, গ্রহিতা দ্বীন ইসলাম, দলিল নম্বর ১২২৪, এই দলিলটি প্রতারণা করে শাহানা বেগম তার স্বামী রেজাউল করিমের নামে সাফ কওলা দলিল করে দেন, যা দ্বীন ইসলাম কোন দিনই উক্ত দলিল শাহানা বা শাহানার পরিবারের কারও নামে করে দেন নাই।
তিনি আরও বলেন, শাহানা বেগম প্রতারণার মাধ্যমে তার স্বামী রেজাউল করিমের নামে ২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ১২৯৪৫ নম্বর সাফ কওলা দলিলে ৬২২৬ নম্বর দলিলটি হস্তান্তর করেন। শাহানা বেগম তার স্বামীর নামে অবৈধ দখল ছাড়া দলিল দিয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জামালপুর সদর কার্যালয় থেকে নামজারি ও জমা খারিজ করিয়ে নেন। যা মাহমুদার নামে দখল, হাল নাগাদ নামজারি ও জমা খারিজ থাকা স্বত্বেও একই ভূমির বিষয়ে দুটি নামজারি ও জমা খারিজ রয়েছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। এই নামজারিটি তৈরির সময় ভূয়া দলিল দিয়ে মিথ্যা চৌহুদ্দি দেখিয়ে শক্তি ঔষধালয় দাবি করে।
এ সময় ভুক্তভোগী জিলহজ আলী নাদু তার পৈতৃক সম্পত্তি রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান এবং ভূমি আত্মসাতের অপচেষ্টাকারী শাহানা বেগম ও তার স্বামী রেজাউল করিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।