দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে কাদের : দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় মাইলফলক

বিশেষ প্রতিনিধি :
আওয়ামী লীগ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের দেওয়া রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে দেশ পরিচালনা করবে জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের ইশতেহারে দেওয়া ওয়াদা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করব। আগামী বাংলাদেশ হবে স্মার্ট ও সমৃদ্ধ। এই নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় মাইলফলক হয়ে থাকবে। বিএনপি তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আমরা যে কোনো মূল্যে সব ধরনের সহিংসতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে, পরাজিত করতে বদ্ধপরিকর।

৮ জানুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

নতুন সংসদে প্রধান বিরোধী দল কে হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের রেজাল্ট অফিসিয়ালি ঘোষণা হওয়ার পর বিরোধী দল কারা, অলরেডি বিরোধী দল জাতীয় পার্টির তো অনেকেই জিতেছেন, চৌদ্দ দলেরও দুজনের মতো জিতেছেন। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তো দূরে নয়।

যিনি লিডার অব দ্য হাউস (সংসদ নেতা) হবেন, তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী, নতুন লিডার অব দ্য হাউস পরিস্থিতি, বাস্তবতা, করণীয় নিয়ে অবশ্যই সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে পদ্ধতিটা আমি কেন আপনাকে বলব? এটা নতুন সরকার বসুক। সংশ্লিষ্ট যারা আছে তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করবেন। বাস্তবতার নিরিখে সিদ্ধান্ত নেবেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যাপারে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জনগণের প্রতিনিধি, তাঁরা নির্বাচিত। এরা এই নির্বাচিত সদস্য হিসেবেই সংসদে বসবেন তাদের ভূমিকা পালন করবেন। এ ছাড়া অন্য কিছু এই মুহূর্তে ভাববার অবকাশ নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ২৯৯ এর মধ্যে ২২৩ আসন একা একটা রাজনৈতিক দল জিতেছে। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী কতজন? অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন, আওয়ামী লীগের চেয়ে স্বতন্ত্রই জিতবে বেশি। আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগই। ২২৩ জন রুলিং পার্টি থেকে জেতা এটা তো একটা পজিটিভ বাস্তবতা।

বিদেশী সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের নিয়ে তিনি বলেন, এটা স্বীকৃতির জন্য নয়। আমাদের ইলেকশনটা কেমন হয় আন্তর্জাতিক বিশ্ব জানতে চায়। আমরা বলেছি, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। স্বাধীন নির্বাচন কমিশন ইলেকশন কন্ডাক্ট করবে। আমাদের এই কথার সঙ্গে কাজের মিল আছে কি না, গণতান্ত্রিক বিশ্ব সেটা প্রত্যক্ষ করুক সেজন্য আমরা এটা করেছি।

নির্বাচন নিয়ে করা বিএনপির মন্তব্য নজরে আনলে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশী-বিদেশী সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক সবাই নির্বাচন দেখেছেন, প্রত্যক্ষ করেছেন এবং আপনাদের নিজেদেরও বিবেক আছে। পরিস্থিতি বোঝার ক্ষমতা আছে, নির্বাচনটা কেমন হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের তীব্র বিরোধিতা ও নির্বাচনবিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এর মধ্যেও কতটা শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অবাধ হয়েছে; সেটা আপনারা নিজেরাই প্রত্যক্ষ করেছেন। যা সত্য তা সবকিছুই আপনারা জানেন। আর যা কিছু মিথ্যাচার আপনারা দেখছেন। এখনো তারা (বিএনপি) মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছে।

বিএনপির আন্দোলন নিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি কী বলেছে, সেটার ওপর তো দেশ চলে না। বিএনপি যেটা বলেছে সে অনুযায়ী তাদের আন্দোলন করে সরকার হটানো এটা তো তারা পারেনি করতে। এই নির্বাচনকে হতে দেওয়া যাবে না এই কথাও তারা বলেছে। নির্বাচন শুধু হতে দেওয়া নয়, নির্বাচন হতে দেবে না, প্রতিহত করবে সবই তো বলেছে, কোনটা সত্য হলো, বলুন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে দেশ পরিচালনা করব। আমাদের ইশতেহারে দেওয়া ওয়াদা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করব। আগামী বাংলাদেশ হবে ‘স্মার্ট ও সমৃদ্ধ’। এই নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় মাইল ফলক হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, বিএনপি- জামায়াত এবারও ব্যর্থ হয়েছে। বারবার নির্বাচন বর্জন করে আগামী পাঁচ বছর অপেক্ষা করা ছাড়া তাদের করণীয় কিছু নেই। আজ তাদের সব অভিযোগ বাস্তবতাবিবর্জিত, ভিত্তিহীন। সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যাচার করে বক্তব্য দিয়েছেন। প্রতিনিয়ত এমন মিথ্যাচার তাদের করুণ পরিণতির জন্য দায়ী।

ওবায়দুল কাদের বলেন, টানা চতুর্থবার ও পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারত, রাশিয়া, চীন, ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূতরা সাক্ষাৎ করে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক ও সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাঈদ খোকন প্রমুখ।সূত্র:জনকণ্ঠ।