শেরপুরে বোরকা পরে স্ত্রীসহ তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা : ঘাতক স্বামী গ্রেপ্তার

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম: যৌতুকের দাবি পূরণ না করায় শেরপুরের শ্রীবরদীতে বোরকা পরে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রীসহ তিনজনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে স্বামী মিন্টু মিয়া (৩৫)। নিহতরা হলো স্ত্রী মনিরা বেগম (৩০), শাশুড়ি শেফালী বেগম (৫০) ও জ্যাঠা শ্বশুর মাহামুদ (৬৫)।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন মনিরার বাবা মনু মিয়া, ভাই শাহাদাৎ হোসেন ও জ্যাঠা শাশুড়ি সাহেরা বেগম।

ঘটনাটি ঘটেছে গেল ২৩ জুন রাতে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পুটল গ্রামে। ঘাতক মিন্টু মিয়া পাশের গেরামারা গ্রামের হাই উদ্দিনের ছেলে।

শ্রীবরদী থানার ওসি তদন্ত আবু সাইম ২৪ জুন সকালে জানান, এ মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ভোররাতে ঘাতক মিন্টুকে পুটল গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নিহতদের স্বজন ও এলাকাবাসী জানায়, প্রায় একযুগ আগে পুটল গ্রামের মনিরার সাথে পাশের গেরামারা গ্রামের মিন্টু মিয়ার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তারা এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক-জননী। বিয়ের সময় মিন্টুকে দেড় লাখ টাকা যৌতুক দেয় শ্বশুর মনু মিয়া। এক সময় আরো যৌতুক চেয়ে মনিরাকে মাঝে মধ্যে মারপিট করতো স্বামী মিন্টু। এ বিষয়টি মিমাংসার জন্য কয়েকবার গ্রাম্য শালিস বৈঠক হয়। এক পর্যায়ে মিন্টুর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ি ফিরে আসে মনিরা।

এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে মিন্টু ২৩ জুন রাতে বোরকা পড়ে ধারালো দা নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে অতর্কিত হামলা করে স্ত্রী মনিরা বেগমকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে শাশুড়ি শেফালী খাতুন, শ্বশুর মনু মিয়া, জ্যাঠা শ্বশুর মাহমুদ, শ্যালক শাহাদৎ হোসেন ও জ্যাঠা শাশুড়ি সালেহা বেগমকে কুপিয়ে গুরুত্বর আহত করে।

পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে পাশের বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে শাশুড়ি শেফালী বেগম ও জ্যাঠা শ্বশুর মাহমুদকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।

অন্যদিকে ওই দিন রাতেই উন্নত চিকিৎসার আহত মনু মিয়া, শ্যালক শাহাদৎ হোসেন ও জ্যাঠা শাশুড়ি ছাহেরা বেগমকে আশংকাজনক অবস্থায় জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

শ্রীবরদী থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনায় নিহতদের মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনার পরপরই ওই এলাকা পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী।