জামালপুর সদরের ১৫ ইউপি নির্বাচন : রাতে নয়, ১০ ইউপিতে ব্যালট পেপার যাবে ১১ নভেম্বর ভোরে

১০ নভেম্বর বিকেলে জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয় প্রাঙ্গণে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে নির্বাচনী সামগ্রী নিয়ে যেতে দেখা যায়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে জামালপুর সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইভিএম পদ্ধতিতে হতে যাওয়া একটি ইউপির ভোট কেন্দ্রগুলোতে ১০ নভেম্বর ইভিএম বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া বাকি ১৪টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ করা হবে গোপন ব্যালটে। এর মধ্যে ১০টি ইউপিতে শুধুমাত্র ব্যালট পেপার যাবে ১১ নভেম্বর ভোরে। জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও জেলা নির্বাচন কার্যালয় সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

জানা গেছে, এবার ১৫টি ইউপির মধ্যে পাঁচটিতে চেয়ারম্যান পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া পাঁচ ইউপির মধ্যে বাঁশচড়া ইউপিতে সংরক্ষিত ও সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ভোট হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। ইভিএম কেন্দ্রগুলোর দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও অন্যান্য কর্মকর্তারা এবং বাকি চারটি ইউপিতে শুধুমাত্র সংরক্ষিত ও সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য প্রার্থীদের ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্সসহ সকল নির্বাচনী সামগ্রী নিয়ে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে ১০ নভেম্বর বিকেলের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট সকলেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছেন।

একইভাবে বাকি ১০টি ইউপিতে প্রতিটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে ১০ নভেম্বর বিকেলের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট সকলেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছেন শুধুমাত্র ব্যালট পেপার ছাড়া বাকিসব নির্বাচনী সামগ্রী নিয়ে। এই ১০টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনপূর্ব ব্যাপক উত্তাপ, উৎপাত, উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি নানা অঘটন ঘটায় অধিকতর নিরাপত্তার স্বার্থে ভোটের আগের রাতের পরিবর্তে ভোটের দিন ভোরে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।

একাধিক সূত্র জানায়, জামালপুর সদরের ১৫টি ইউনয়নের মধ্যে রশিদপুর, দিগপাইত, বাঁশচড়া, রানাগাছা ও ইটাইল এই পাঁচ ইউপিতে আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকা প্রতীকে পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আগেই। বাকি ১০টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকা প্রতীকে মনোনীত প্রার্থী ছাড়াও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীসহ একাধিক স্বতন্ত্রপ্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই ১০টি ইউপিতে এখনো বড় ধরনের কোন নির্বাচনী সহিংসতা না ঘটলেও কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনের মাঠে সরব থাকায় সর্বত্রই আওয়ামী লীগ দলীয় কোন্দলে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নির্বাচনী এলাকাগুলো।

এই ১০টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪০ জন। ইতিমধ্যে পাল্টাপাল্টি পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা এবাং নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্র ভাংচুর, প্রতিপক্ষের সমর্থকদের মারধর, ভয়ভীতি অগ্নিসংযোগের মতো বেশ কয়েকটি ঘটনায় এলাকায় বেশ আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভোটের দিন কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক সহিংসতার শঙ্কা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হলে ভোটের ফলও বদলে যেতে পারে বলেও জনমনে প্রচার রয়েছে। ফলে এই ১০টি ইউপির প্রতিটি ভোট কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। অপরদিকে মোট ১৫টি ইউপিতে সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড সদস্য পদে ১৮৪ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৫৪২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ১৫টি ইউনিয়নের ১৬৩টি কেন্দ্রে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রের আইনশৃংখলা রক্ষায় পাঁচজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, ১৫টি ইউপিতে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অধিকতর নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ পাহারায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে ১০টি ইউপির চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত ও সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদের শুধুমাত্র ব্যালট পেপার ১১ নভেম্বর ভোরে প্রতিটি কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হবে। নির্বাচনী স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং ভোটের আগের রাতে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।