যেখানে সমস্যা হবে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে : শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি

জামালপুর পৌর শাখা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার আগমুহূর্তে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, কোথাও যদি সংক্রমণের হার বাড়ার আশঙ্কা দেখা যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকার কারণে, তাহলে কিন্তু আমাদের আবার সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেখানে সমস্যা হবে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাথে সাথে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে জামালপুর শহরের ফৌজদারী মোড়ে জামালপুর পৌর শাখা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

বিশ্বের কোথাও কোথাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর সংক্রমণ বাড়ার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামীকাল থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক সকল ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিচ্ছি। তাই সকলের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে। প্রত্যেক অভিভাবককে তার সন্তানকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর আগে নিশ্চিত হবেন যে বাড়িতে কেউ করোনা আক্রান্ত নেই। যে শিক্ষার্থীটি যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানে তার করোনার কোনো উপসর্গ নেই। এই বিষয়গুলো নিশ্চিত করেই তাকে মাস্ক পরিয়ে তারপরে তাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাবেন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করবে। তারা অনুসরণ করছে কিনা তা স্থানীয় পর্যায়ে কমিটি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সকলেরই দায়িত্ব রয়েছে এটি দেখার। আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাঠপর্যায়ে যারা কাজ করছেন তারাও তা মনিটর করবেন। তার মাধ্যমেই আমরা চেষ্টা করবো যেন কোনোভাবেই করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে না যায়। আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক তাদের সুরক্ষার বিষয়টি অবশ্যই সরকার বিবেচনায় নিয়েছে।

দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদিও আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম চলেছে অনলাইনে, টেলিভিশনে এবং অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে। তারপরেও শিক্ষর্থীরা তাদের সমবয়সীদের সাথে মেলামেশা করতে পারেনি। চলাফেরা করতে পারেনি। স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেনি। কাজেই তাদের শারীরিক, মানসিক নানান ধরনের সমস্যার কথা চিন্তা করে আমরা এই করোনার সংক্রমণ কিছুটা থাকা সত্ত্বেও কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমরা আপনাদের সর্বাত্বক সহযোগিতা চাই। এই নতুন প্রজন্ম আমাদের ভবিষ্যৎ যারা তাদের জীবন যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করে যাবো।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজকে সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আমরা এই অর্জন করেছি। বাংলাদেশের সকলক্ষেত্রে উন্নয়নের মূল হাতিয়ার এই শিক্ষা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষায় আজ যে প্রগতি সূচিত হয়েছে। তার ওপর ভিত্তি করেই আমাদের আগামীর প্রজন্মকে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

জামালপুর পৌর শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুম রেজা রহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ এবং প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী। পৌর শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, সাবেক তথ্যমন্ত্রী মো. আবুল কালাম আজাদ এমপি, সাবেক ভূমিমন্ত্রী মো. রেজাউল করিম হীরা, প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, বেগম হোসনে আরা এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য মারুফা আক্তার পপি ও উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পৌরমেয়র মো. ছানোয়ার হোসেন প্রমুখ।