সবার জন্য ভ্যাকসিনের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা প্রতিরোধকল্পে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর পুনরায় গুরুত্বারোপ করে পবিত্র ঈদুল আজহায় দেশের বাড়ি গমনেচ্ছুক যাত্রীদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে সবাইকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। ইনশা আল্লাহ কেই বাদ যাবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে সকলে যেন স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমি জানি আমাদের মানুষগুলো একটু গ্রামের উদ্দেশে ছুটতে পছন্দ করে, মাস্ক পরতে চায় না। কিন্তু প্রশাসনের যারা যেখানে দায়িত্বরত আছেন তারা একটু চেষ্টা করবেন মানুষকে বোঝাতে এবং তারা যেন মাস্কটা অন্তত পরে আর যেন সাবধানে থাকে।’

সরকার প্রধান ১৮ জুলাই সকালে মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহের ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান-২০২১’র প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত মুল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

পর্যায়ক্রমে সবাইকে ভ্যাকসিন দিতে সরকারের উদ্যোগের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন মানুষ যেন ভ্যাকসিন থেকে বাদ না পড়ে। সেভাবে কিন্তু আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করেছি। ভ্যাকসিন আসছে। আমাদের দেশের সকলেই যেন ভ্যাকসিন নিতে পারে তার জন্য যত ভ্যাকসিন দরকার আমরা কিনে আনবো এবং দেশের সবাইকে সেই ভ্যাকসিন দিবো।

তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি আমাদের দেশের মানুষ যেন কোন রকম ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।

সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, করোনার এই পরিস্থিতিতে সকলে যেন স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলে সেদিক দৃষ্টি দিতে হবে। নিজের সুরক্ষা নিজেকেই করতে হবে।

অনুষ্ঠানে সরকারের সকল মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সিনিয়র সচিবগণ ২০২১-২২ সালের এপিএ স্বাক্ষর করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক স্বাক্ষরকৃত ডকুমেন্ট গ্রহণ করেন। ৮ম বারের মত এদিন এপিএ স্বাক্ষরিত হলো। মন্ত্রী পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এপিএ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এবং স্বাগত বক্তব্যে রাখেন।

আ ক ম মোজাম্মেল প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননা প্রাপ্ত ১০টি মন্ত্রণালয়/বিভাগকে এবং জাতীয় শুদ্ধাচার পুরস্কারও প্রদান করেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যক্তি পর্যায়ে শুদ্ধাচার পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এনএম জিয়াউল আলম শ্রেষ্ঠ বিভাগ হিসেবে এপিএ সম্মাননা পাওয়ায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

কর্মসম্পাদন চুক্তির সামগ্রিক বিষয়বলী নিয়ে অনুষ্ঠানে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তির মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমসমূহের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন করে থাকে। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননা প্রাপ্ত ১০টি মন্ত্রণালয়/বিভাগকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি অভিনন্দন জানাই সার্বিক মূল্যায়নে প্রথম স্থান অর্জনকারী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগকে। আমি আশা করি, মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহ বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নে ভবিষ্যতে অধিকতর কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

তিনি বলেন, সোনার বাংলা বিনির্মাণে শুদ্ধাচার চর্চা ও দুর্নীতি প্রতিরোধের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের সরকার ২০১২ সালে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রণয়ন করে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২০১৫ সাল হতে শুদ্ধাচার কৌশল কর্ম পরিকল্পনার বাস্তবায়ন অগ্রগতি মূল্যায়ন করা হচ্ছে। শুদ্ধাচার চর্চায় উৎসাহিত করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে শুদ্ধাচার চর্চাকারী কর্মচারীদের ২০১৭ সাল হতে শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রথম স্থান অর্জন করায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যক্তি পর্যায়ে শুদ্ধাচার পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারকেও আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।সূত্র:বাসস।