মেলান্দহে স্ত্রীকে পিটিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বামী আওয়ামী লীগনেতা তাহের আটক

কাজাইকাটা গ্রামে স্বামীর নির্মম নির্যাতনে নিহত তানিয়ার মরদেহ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

নিজ ঘরে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে স্ত্রী তানিয়া বেগমকে (২৬) নির্মমভাবে হত্যার অভিযোগে স্বামী আবু তাহেরকে আটক করেছে পুলিশ। আটক আবু তাহের জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি স্থানীয় নূর ইসলামের ছেলে। ২ জুন সকালে ওই ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত তানিয়া পাশের নয়ানগর গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. হাসান আলীর মেয়ে।

স্থানীয় প্রতিবেশী সূত্র জানায়, ২ জুন সকাল ৭টার দিকে পারিবারিক মনোমালিন্যের জের ধরে শ্যামপুর ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামে নিজ বাড়িতে আওয়ামী লীগনেতা আবু তাহের ও তার স্ত্রী তানিয়া বেগমের মধ্যে তুমুল ঝগড়া বাঁধে। ঝগড়ার একপর্যায়ে ভয়ে তানিয়া ঘরে ঢুকে স্টিলের দরজা ভেতর থেকে আটকে দেন। এ সময় আবু তাহের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তানিয়াকে প্রথমে লাঠি দিয়ে বেদম পেটায়। এরপর তাকে গলায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে শিশু সন্তান রয়েছে।

ঘটনা জানতে পেরে মেলান্দহ থানা পুলিশ ২ জুন দুপুরে ওই গৃহবধূর স্বামী আবু তাহেরকে আটক করেছে। তাকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। বিকেলে মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এম ময়নুল ইসলাম পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তানিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।

নিহত তানিয়ার বাবা পানসুপারি ব্যবসায়ী মো. হাসান আলী বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, আমার মেয়ের জামাই আবু তাহের তার দুই শিশুসন্তানসহ মেলান্দহের ভাড়া বাসায় থাকতেন। গেল ঈদের পর আবু তাহের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তার নিজ বাড়িতে চলে যায়। তাদের মধ্যে মাঝেমধ্যে ছোটখাট ঝগড়া বিবাদ হতো। আবার মিলমিশ হয়ে সংসার করে আসছিল। কিন্তু আজকে সকালে কি কারণে যে তাহের তানিয়াকে হত্যা করল তা বলতে পারছিনা। আমার মেয়েকে হত্যার বিচার চাই। তাহেরকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করবো।

মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এম ময়নুল ইসলাম বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, নির্যাতনের কারণে নিহত তানিয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এবং গলায় শ্বাসরোধের জখম পাওয়া গেছে। তার স্বামী আবু তাহেরকে আটক করা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জামালপুর মর্গে পাঠানো হবে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।