বড় ধরনের বিপদ হতে পারতো!

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

স্যার অতি ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। ধান এবং খড় খুব সাধারণভাবে শুকাবে তা নয়। বরং তারা ধানগুলি রাস্তায় নেড়ে ধানের দুই পাশে বাঁশ, গাছের টুকরো, ইট অর্থাৎ এমন একটা কিছু দিয়ে রাখে যাতে করে ধানের ওপর দিয়ে যেন কেউ যেতে না পারে।

আমি মনে করি এতে করে যেকোন সতর্ক চালক ভুলবশত বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। আমি নিজেও একদিন বাইক ড্রাইভ করতেছি হঠাৎ করেই সামনে চিকন একটা গাছের টুকরো পড়ে গেল।

এমন পজিশনে গাছের টুকরোটা দিয়ে রাখছে খেড়ের পরেই ধান সো দূর থেকে গাছের টুকরোটা তা বুঝা যাচ্ছিল না। গাছটি মোটা এবং আমার গাড়ির গতি বেশি থাকলে বড় ধরনের বিপদ হতে পারতো।

ঝিনাইগাতী টু তিনানী রাস্তার ভুক্তভোগী হিসাবে, স্যার আমি আশাবাদী আপনাদের উদ্যোগ খুব শীঘ্রই বাস্তবে পরিণত হবে। অগ্রিম ধন্যবাদ।

১ মে রাতে শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ কর্তৃক পরিচালিত ফেসবুক পেজ ‘ঝিনাইগাতী থানা শেরপুর’-এ সড়কে খড় ও ধান শুকানোর বিষয়ে একটি সতর্কীকরণ বার্তা পোস্ট করা হয়। সেই বার্তার প্রশংসা করে কথাগুলো লেখেন- শেরপুরের ঝিনাইগাতীর এমডি আবু সামা কবির নামে এক ভুক্তোভোগী।

তার মতো আরও ১১৯ জন সেখানে ওই বিষয়ে কমেন্ট করেন। ৩৫৫ জন লাইক ও ভালোবাসা জানিয়ে রিয়েক্ট করেন আর স্ট্যাটাসটি ৫২ জন শেয়ার করেন।

২ মে সকালে ওই ফেসবুক পেজটি ভিজিট করার সময় এ তথ্য পাওয়া যায়।

সবার উদ্দেশ্যে পোস্টে উল্লেখ করা হয়-

প্রিয় ঝিনাইগাতীবাসী, আপনারা কেউ দয়া করে পাঁকা রাস্তার উপর কাটা ধান রাখবেন না, মাড়াই করবেন না, ধানের খড় শুকানোর জন্য জড়ো করে রাখবেন না, এই কারণে ইতোমধ্যে বড় একটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে গেছে, এটা যানবাহনসহ মোটরসাইকেলের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এরপরও কেউ এহেন কাজ অব্যাহত রাখলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে বাধ্য হব।

এ বক্তব্যের সাধুবাদ জানিয়ে, রফিকুল ইসলাম নামে এক গণমাধ্যমকর্মী লেখেন, আমি নিজে কিছুদিন আগে বাগেরভিটা থেকে মোটরসাইকেলে আসার পথে রাস্তার ওপর ছড়ানো খড়ে স্লিপ করে বড় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলাম। ধন্যবাদ, পদক্ষেপের জন্য।

শহীদুল ইসলাম নামে একজন লেখেন, আমার বড় ভাই ১ সপ্তাহ থেকে এই দুর্ঘটনার শিকারে ভুগতেছে। সঠিক সিদ্ধান্ত স্যার।

আব্দুল হান্নান লেখেন, শেরপুর জেলা অটো টেম্পু, অটো রিকশা সিএনজিচালক শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নম্বর ৪৫৮৮ এর সকল শ্রমিকদের পক্ষ থেকে স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। খুব ভালো উদ্যোগ।

নোমশের আলম লেখেন, আজকেও (১ মে) রাত ৯টায় বগাডুবি ব্রিজ পার হয়ে ২ জায়গায় দেখলাম পাকা রাস্তার ওপর বড় বড় দুটি আটির ডিবি। এগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সকলের সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

এম এ হামিদ লেখেন, স্যার, ভালো একটা দিক তুলে ধরছেন। আমি গত কয়েক দিন আগে দেখলাম। তেঁতুলতলা বাজার থেকে ঝিনাইগাতী বাজার পর্যন্ত রাস্তায় ধান রাখায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি খুব বেশি। এটার দ্রæত একটা সমাধানে আসা উচিত। ধন্যবাদ স্যার।

স্যার আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুক এমন মন্তব্য করেছেন – এমডি জামিল আহমেদ নামে একজন।

হাফেজ মাওলানা আশরাফুল ইসলাম লেখেন, জনসচেতনতা মানুষের কল্যাণ বয়ে আনে। আমার দেখাতে প্রায় রাস্তায় ধানের মৌসুমি কাজ চলমান আছে, তন্মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা আহমদ নগরের পর থেকে কয়রুট পর্যন্ত রাস্তাটুকু বেশি বিপদজনক মনে হয়।

এ সম্পর্কে ঝিনাইগাতী থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান ২ মে সকালে বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে কৃষক-কৃষাণীরা ধান ঘরে তোলতে শুরু করেছেন। অনেকেই কাঁচা ধান ও খড় শুকানোর জন্য ঝিনাইগাতী-শেরপুর সড়ক ব্যবহার করছেন। এ কারণে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন এ পথে চলাচলকারী যাত্রীরা। ১ মে রাতে শেরপুর থেকে ঝিনাইগাতী ফেরার পথে যাত্রীবাহী একটি সিএনজি অটোরিকশা রাস্তায় ফেলে রাখা খড়ের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা খায়। এ সময় অটোতে থাকা তিন যাত্রী আহত হন। এ কারণে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কটি নিরাপদ রাখতে সকলের উদ্যোশে ওই স্ট্যাটসটি দেওয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি জানান, এ সতর্ক বার্তা ভঙ্গকারী আর্থিক জরিমানা এবং মোটরযান আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলার সম্মুখিন হবেন।