রোমে বাংলাদেশ চ্যান্সেরি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের নতুন চ্যান্সেরি ভবন উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে ইতালির রাজধানীর ভিয়া ডেল’ অ্যান্ট্রাটাইড এলাকায় ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে ২৩ দশমিক ৯ কাঠা জমির উপর নির্মিত পাঁচ তলা চ্যান্সেরি ভবনটির উদ্বোধন করেন।

এ সময় দেশ ও জাতির অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, রোমে নিযুক্ত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত আব্দুস সোবহান সিকদার, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহ্সানুল করিম ও দূতাবাসের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে, প্রধানমন্ত্রী চ্যান্সেরি ভবনের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি দর্শনার্থী বইয়েও স্বাক্ষর করেন।

দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, তাঁর সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর যেসব দেশে বেশি বাংলাদেশী বসবাস করছে সেসব দেশে নিজস্ব চ্যান্সেরি ভবন এবং দূতাবাস নির্মাণের পদক্ষেপ নিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যে সব দেশে অনেক বেশি বাংলাদেশী বসবাস করছেন সেখানে বাংলাদেশের নিজস্ব চ্যান্সেরি ভবন নির্মাণ করতে বলেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমি আজ খুব আনন্দিত যে, আমরা ইটালিতে আমাদের নিজস্ব চ্যান্সেরি ভবন খুলতে পেরেছি। ইউরোপে ব্রিটেনের পরে এখানেই সর্বাধিক সংখ্যক বাংলাদেশী বসবাস করছেন।’

রোমে চ্যান্সেরি ভবন নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশ নিজস্ব বিল্ডিং এবং পরিচিতি পেয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দূতাবাস বিদেশের মাটিতে একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করে এবং দেশটির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার পাশাপাশি প্রবাসীদের সেবা প্রদান করে থাকে।

তিনি বলেন ‘এর মাধ্যমে আমরা আমাদের আর্থ-সামাজিক বিকাশে অনেক বেশি অবদান রাখতে পারি।’

শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান পৃথিবীতে বিশ্ব একটি গ্রামে পরিণত হয়েছে, যেখানে কেউ একা একা চলতে পারে না।

তিনি বলেন, ‘তাই, আমরা বিভিন্ন দেশে আমাদের নিজস্ব চ্যান্সেরি ভবন এবং দূতাবাস ভবন নির্মাণ করছি। এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়, কারণ সেখানে আমাদের পতাকা উড়বে এবং সেসব দেশের মানুষ বাংলাদেশ সম্পর্কে আরও জানতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন যে, জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশকে পুনর্গঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের নিজস্ব দূতাবাস ভবন নির্মাণের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত পররাষ্ট্রনীতি- ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’- অনুসরণ করছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে চ্যান্সেরি ভবনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অবহিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী চ্যান্সেরি ভবনে পৌঁছে প্রথমে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে স্থাপন করা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর তিনি চ্যান্সেরি ভবনের অভ্যন্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে ৩১টি দেশে বাংলাদেশের নিজস্ব চ্যান্সেরি এবং দূতাবাস ভবন নির্মিত হবে।

শেখ হাসিনা ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতের আমন্ত্রণে ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে চারদিনের এক সরকারি সফরে ইতালি পৌঁছেছেন।সূত্র:বাসস।