সরিষাবাড়ীতে ১৭ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করলো প্রধান শিক্ষক

প্রধান বেত্রাঘাতের শিকার হওয়া শিক্ষার্থীরা। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নামাজ আদায় না করায় ১৭ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টায় চিলড্রেন্স হোম পাবলিক স্কুলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসকসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী পৌরসভার চিলড্রেন্স হোম পাবলিক স্কুল প্লে থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক শ্রেণি কক্ষে ডুকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকল শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চান ১ অক্টোবর তোমরা কে কে ফজরের নামাজ পড়নি। এ সময় দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ সিমান্ত, সিফাত ইসলাম, সজিব মিয়া, মিফতা ও জেরিন ফজরের নামাজ পড়েনি বলে জানায়। এ সময় প্রধান শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে তাদেরকে বেত্রাঘাত করেন। পরে শিক্ষাথীরা কান্নাকাটি করলে প্রতিষ্ঠানের পিয়ন আব্দুল আলীম ব্যাথানাশক মলম লাগিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

শিক্ষার্থী সিফাত ইসলাম বাড়িতে গিয়ে তার বাবা জহুরুল ইসলামকে জানালে তাৎক্ষণিকভাবে ছেলেকে নিয়ে বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে এর প্রতিবাদ করেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ঘটনার বিষয়াদি প্রধান শিক্ষকের নিকট জানতে চান। এ সময় চতুর্থ শ্রেণির পাঁচ শিক্ষার্থী ছাড়াও আরো ষষ্ঠ শ্রেণির ১২ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করার সত্যতা পান।

আহত শিক্ষার্থীরা হলো চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তানভীর আহমেদ সিমান্ত, সিফাত ইসলাম, সজিব, মিফতা ও জেরিন, ষষ্ঠ শ্রেণির মাহজাবিন ইসলাম, জান্নাতুল মাওয়া, নওরিন সুলতানা, আব্দুল মোতালেব, ইয়াসীন আরাফাত, রিফাতুজ্জামান, মাহিদুল হাসান, শরিফুল ইসলাম, ফজলে রাব্বী, আরাফাত ও জাহাঙ্গীর কবীর।

বেত্রাঘাতের ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ সিমান্তের বাবা সেলিম রেজা ১ অক্টোবর বিকেলে বিচারপ্রার্থী হয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এ ব্যাপারে চিলড্রেন্স হোম পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের চরিত্র খারাপ হয়ে গেছে। তাদের নৈতিক শিক্ষা দেওয়ার জন্যই বেত্রাঘাত করে চরিত্র সংশোধনের চেষ্টা করছি।

জানতে চাইলে সরিষাবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ধর্ম শিক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন, তথাপিও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাত করা ঠিক হয়নি। এ রকম ঘটনা যেন আর না হয় সে বিষয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিহাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করার ঘটনায় কোনো অভিভাবক অভিযোগ করলে বেত্রাঘাতকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

sarkar furniture Ad
Green House Ad