সরিষাবাড়ীতে প্রকাশ্যে চলছে কোচিং বাণিজ্য

মমিনুল ইসলাম কিসমত, সরিষাবাড়ী ॥
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে কোচিং প্রাইভেট বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যালয়গুলোর লেখাপড়ার মান হ্রাস পেয়েছে। অধিকাংশ স্কুল-মাদরাসায় শিক্ষার্থী উপস্থিতি একেবারেই নিম্নমুখী।

গত এক সপ্তাহে উপজেলার ৪১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২২টি মাদরাসার মধ্যে প্রায় ২০টি প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, হাজিরা খাতার সাথে উপস্থিতির মিল নেই। অধিকাংশ স্কুল ও মাদরাসায় ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি ৪০ শতাংশেরও কম। এসব ছাত্র-ছাত্রীরা পাশের কোনো কোচিংয়ে সকাল থেকে বিকেল নাগাদ ক্লাশ করছে। যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে নির্দেশনা আছে- এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া কোনো কোচিং সেন্টার সকাল ১০টা থেকে বিকেল চারটা পযর্ন্ত ক্লাশ চলতে পারবে না। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আরামনগর বাজার, বাউসি বাজার, বয়ড়া বাজার, মৌলভী বাজার, তারাকান্দি, সানাকৈর, ভাটারা ও পিংনাসহ অর্ধশতাধিক স্পটে কোচিং সেন্টার বা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে সেখানে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। এগুলো প্রতিষ্ঠানে সরাসরি জড়িত এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা।

জানা গেছে, কোচিংগুলো এসএসসি বা এইচএসসি পাশ শিক্ষক-শিক্ষিকা দ্বারা পরিচালিত ও পড়ালেখার মান নিন্মমুখী হলেও অভিভাবকদের ফুসলিয়ে ছেলেমেয়েদের কোচিংয়ে পড়াতে বাধ্য করা হচ্ছে। ফলে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি দিন দিন কমে যাচ্ছে। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিমলা বাজারের কয়েকজন অভিভাবক জানান, শিমলা বাজারের বেশ কয়েকটি বাসায় কলেজ ও স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা তাদের প্রতিষ্ঠানের ক্লাশ ফাঁকি দিয়ে সারাদিন বাসায় প্রাইভেট পড়ায়।

আরডিএম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, কিছু কিছু কোচিং ও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান আগে গোপনে ক্লাশ করত আর এখন প্রকাশ্যে ক্লাশ করছে। আরইউটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুণ কুমার সাহা, পাইলট গালর্স স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আব্দুর রউফ, সালেমা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীন, ডোয়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফ হোসেন, পঞ্চাশী রেজাউর হক কাবেরিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার এম এ মান্নান, দৌলতপুর ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক, গাড়াডোবা সিরাতুন্নবী আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ আবু বকর সিদ্দিকসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান জানান, আমরা বার বার স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করেছি এসব প্রাইভেট কোচিং বন্ধ করতে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে বন্ধ হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, কোচিং বাণিজ্য সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী নিষেধ। এগুলো বন্ধ করার জন্য শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *