সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ২৮ সেপ্টেম্বর, রবিবার ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। চারদিকে এখনই শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ।
এ আয়োজনের অন্যতম অনুষঙ্গ দেবী দুর্গার প্রতিমা। উৎসবকে সামনে রেখে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার প্রতিমাশিল্পীরা। পূজার সময় ঘনিয়ে আসায় শিল্পীদের ব্যস্ততাও বেড়েছে অনেক। শিল্পীরা দিন-রাত পরিশ্রম করে গড়ে তুলছেন দেবী দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী, কার্তিক, গণেশ ও মহিষাসুরের প্রতিমা। মাটি, খড়, বাঁশ ও রঙের সমন্বয়ে তৈরি করা হচ্ছে এসব প্রতিমা। ইতোমধ্যেই প্রতিমার মাটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এরপর শুরু হবে রঙ ও সাজসজ্জার কাজ।
উপজেলার বেশ কয়েকটি পূজা মণ্ডপ ঘুরে দেখে গেছে, প্রতিমা শিল্পীদের নিপুণ আঁচড়ে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। এরই মধ্যে প্রতিমা তৈরির প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। দিনরাত পরিশ্রম করে শিল্পীরা তাদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় কাদামাটি, খড়, বাঁশ, সুতলি দিয়ে তৈরি করছেন একেকটি প্রতিমা। প্রতিমা গড়া শেষ হলে রঙ তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হবে অবয়ব। মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি মণ্ডপে আলোকসজ্জা ও সাজসজ্জার কাজও চলছে পুরোদমে।
সুশীল কুমার পাল বলেন, মূর্তি তৈরির প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বেড়ে গেছে। ফলে খরচ বেড়েছে। পূজা শুরুর আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। দম ফেলার সময় নেই। এর মধ্যেই দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির সব কাজ শেষ করতে হবে।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আনন্দ চন্দ্র চৌধুরী বলেন, আমরা মাদারগঞ্জে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব পালন করে থাকি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২৭ মণ্ডপে দেবীর আরাধনা অনুষ্ঠিত হবে। কিছুদিনের মধ্যে মন্দিরে মন্দিরে প্রতিমা স্থাপিত হবে। মণ্ডপগুলোতে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে প্রশাসনের পাশাপাশি মন্দির কমিটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আশা করছি, প্রতিবারের মতই সুষ্ঠুভাবে দুর্গোৎসব পালিত হবে।
মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল্লাহ সাইফ এ প্রতিবেদককে বলেন, উপজেলায় ২৭টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। অধিকাংশ মন্দিরেই প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাদির শাহ এ প্রতিবেদককে বলেন, দুর্গাপূজা সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পূজা চলাকালীন উপজেলায় নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা থাকবে। পূজামণ্ডপের নিরাপত্তাসহ যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সার্বক্ষণিক পুলিশের কয়েকটি টহল দলের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও নিয়োজিত থাকবে।