জিয়ার দল বিএনপি ও মির্জা ফখরুলরা হলো বর্ণচোরা : মতিয়া চৌধুরী

প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি। ছবি : মেহেদী হাসান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম : বাংলদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেছেন, ক্ষমতার লোভে জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের সাথে মহব্বত করেছিলেন। পাকিস্তানের কাছে আমাদের যে পাওনা, হিসাব-নিকাশ ছিলো সব কিছু জিয়াউর রহমান ভুলে গিয়েছিলেন ক্ষমতার লোভে। জিয়ার দল বিএনপি ও মির্জা ফখরুলরা হলো বর্ণচোরা। তারা মুখে স্বাধীনতার কথা বলে। আবার রাতের বেলা স্বাধীনতাবিরোধী জামাতের সাথে মিটিং করে। তাদের কাছে বাংলাদেশ কোনোদিনই নিরাপদ নয়। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণকে সাথে নিয়ে ভোটের মাধ্যমে তাদেরকে রুখে দিতে হবে।

১২ নভেম্বর বিকেলে জামালপুর শহরের সিংহজানী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জামালপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু জনতার রায় নিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছিলেন এবং যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করে গেছেন। আজকে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নি:স্বার্থভাবে দেশের দায়িত্ব পালন করছেন। কোন হত্যা-গুমের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতায় আসেননি। কোনদিন বাঁকা পথে ক্ষমতায় আসেননি। তিনি জনগণের রায় নিয়ে ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন। বিএনপি বলেন অমুক দল বলেন সবাই কিন্তু পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষতায় এসেছিল।

করোনা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মতিয়া চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা যা বলেন দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও তিনি তা করে দেখান। করোনার সময় দেশের রাজনৈতিক কবিরাজরা বলেছিল এইবার বাংলাদেশ শেষ হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করে সারাবিশ্বে সুনাম কুড়িয়েছেন। রাজনৈতিক এন্টিবায়োটিক দিয়ে অঘোর রাজনৈতিক কবিরাজদের সেই ভবিষ্যৎবাণীকে অসত্য বলে প্রমাণ করেছেন।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, দেশের সংবিধানে জনগণের জন্য অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা এবং বাসস্থানের যে গ্যারান্টি দেওয়া আছে, একে একে সব কিছুই বাস্তবায়ন করে চলেছেন শেখ হাসিনা। আলোকিত জীবন গড়ার জন্য এদেশের মানুষ বারবার নৌকায় ভোট দেয়। শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানায়। আগামী নির্বাচনেও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিএনপি ও মির্জা ফখরুলদের সমুচিত জবাব দেওয়ার জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

জামালপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. এম এ মান্নান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ এবং প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী হাফিজুর রহমান স্বপনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, মির্জা আজম এমপি, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, সদস্য মারুফা আক্তার পপি, রেমন্ড আরেং, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মোজাফফর হোসেন এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশরাফ হোসেন তরফদার ও পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন প্রমুখ। সম্মেলনে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ১৫টি ইউনিয়নের নেতা-কর্মীসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

পরে সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিল অধিবেশনের সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কাউন্সিল অধিবেশনের স্থান জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানান্তরিত হয়। সন্ধ্যার পর সেখানে সমঝোতার ভিত্তিতে বিগত কমিটির সভাপতি ডা. এম এ মান্নান খানকে পুনরায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী মো. হাফিজুর রহমান স্বপনকে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।