জামালপর সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৫৬ কার্যদিবসে ৪৪১ টি মামলা নিষ্পত্তির রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে বিগত ৩ মাসে (এপ্রিল-জুন) মাত্র ৫৬ কার্যদিবসে রেকর্ড সংখ্যক মামলা নিষ্পত্তির খবর পাওয়া গেছে। মামলা নিষ্পত্তির বিষয়ে জানা যায় অত্র আদালতের বিচারক ইকবাল মাহমুদ মামলায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকটি মামলা তদারকি করেন এবং সেই মামলা গুলোতে বিজ্ঞ বিচারক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিজ হাতে গ্রহণ করেন। এছাড়া এজলাসেই গুরুত্বপূর্ণ মামলা গুলোর আদেশ প্রদান করা হয়। দীর্ঘদিনের পুরনো মামলা গুলো বিজ্ঞ বিচারক মহোদয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে ১৯৭৮ সালের এবং ১৯৮১ সালের দুটি মামলা বিজ্ঞ বিচারক পরপর ধার্য তারিখ দিয়ে নিষ্পত্তিতে সর্বাত্তক চেষ্টা করেছে মর্মে আদালত সূত্রে জানা যায়। মাত্র ৫৬ কার্যদিবসে মোট ৪৪১ টি মামলা নিষ্পত্তি হয় এবং ২৪টি মামলা ইন্টারলোগেটরী আদেশ প্রদান করা হয়। নিষ্পত্তিকৃত মামলার মধ্যে রয়েছে- স্বত্ব এবং অন্য প্রকার মামলা ৩১১টি, এসিসি মামলা ১টি, নির্বাচনী মামলা ৫৮টি, বিবিধ মামলা ২২টি, জারী মামলা ৪৯টি। এছাড়া অন্যপ্রকার মামলা বদলী করা হয় ৯২৬টি, পারিবারিক মামলা ২২০টি, বিবিধ মামলা সহ সর্বোমোট ১১৯৬টি মামলা বদলী করা হয়। আদালত, সূত্রে জানায় যায়, গত তিন মাসে অত্র আদালতে মামলা দায়ের হয় ২১৩টি, পূর্বের জের ছিলো ৪১০২টি, সর্বোমোট মামলা হয় ৪৩১৫টি এবং নিষ্পত্তি ৪৪১টি সহ ১১৬২টি মামরা বদলী করা হয়। সব মিলিয়ে বর্তমানে অত্র আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ২৬৭৮টি। মাত্র ৫৬ দিনে আদালতে দো-তরফা সাক্ষী নেওয়া হওয় ৬৮৭টি, একতরফা সাক্ষী নেওয়া হয় ১৪৪টি। সর্ব মোট সাক্ষী নেওয়া হয় ৮৩১টি। প্রত্যেক দিনে অনুপাতে গড়ে ১৫ জনের মতো সাক্ষী নেওয়া হয়। ইতোমধ্যেই অত্র আদালতে প্রচুর মামলা নিষ্পত্তি হয়। এবিষয়ে সমগ্র জেলায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এবং বিচার প্রার্থী জনগণসহ বিজ্ঞ আইনজীবী এবং বিচার সংশ্লিষ্ট পক্ষরা মামলা নিষ্পত্তির ব্যাপারে তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। জানা যায়, বিজ্ঞ বিচারক মহোদয় অত্র আদালতে যোগদান করার পর থেকে করোনার সময় প্রায় এক/দেড় বছর বাস্তব কারণেই আদালতের নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রম প্রায় বন্ধ থাকায় মামলার নিষ্পত্তির হার অনেক কমে যায়। পরবর্তীতে বিজ্ঞ বিচারক মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বর্তমানে আদালতে মামলার নিষ্পত্তির হার যে কোন সময়ের চেয়ে বিপুল পরিমানে বেড়ে যায়। নিষ্পত্তি বিবেচনায় দেখা যায় মামলা দায়ের থেকে প্রায় দ্বিগুন বেশী মামলা নিষ্পত্তি হয়। এ বিষয়ে অত্রাদালতের সেরেস্তাদার জনাব বিশ^জিৎ গোস্বামী বলেন, অত্রাদালতের বিজ্ঞ বিচারক মহোদয় অত্রাদালতের সাথে আমারা যারা কর্মচারী হিসেবে কর্মরত আছি সকলকে নিয়ে নিয়মিত মামলা নিষ্পত্তির বিষয়ে তদারকি করেন এবং আমাদের সাথে পরামর্শ করে মামলা নিষ্পত্তি অগ্রাধিকার প্রদান করেন। বিশেষ করে জামালপুর জেলা জজ আদালতে বিগত ১৭ জুলাই মামলা নিষ্পত্তি সংক্রান্ত মনিটরিং কমিটি ময়মিনসিংহ বিভাগের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব প্রাপ্ত বিজ্ঞ বিচারপতি জনাব মোঃ জাকির হোসেন মহোদয় এবং মহোদয়ের সাথে বিজ্ঞ বিচারপতি জনাব মোঃ মাহমুদ হাসান তালুকদার জেলা জজ আদালত পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শনে এসে সিনিয়র সহকারী জজ সদর আদালতের মামলা নিষ্পত্তির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিচারপতি মহোদয় গণ বিজ্ঞ বিচারকের সাথে এজলাসে বসে বিচার কার্যক্রম দেখেন এবং বিচার কার্য বিষয়ে বিজ্ঞ বিচারপতি মহোদয়গণ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। এছাড়া জামালপুর জেলার আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ সভাপতি সহ সমিতির অন্যান্য সদস্যরা বিজ্ঞ বিচারপতি জনাব মোঃ জাকির হোসেন এবং বিচারপতি মোঃ মাহমুদ হাসান তালুকদারের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে অত্র আদালতের মামলা নিষ্পত্তি বিষয়ে বিজ্ঞ বিচারকের দূরদর্শিতা ও পরিশ্রমের ফলে মামলা নিষ্পত্তির হার বেড়ে

যায় সে বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতি হতে বিজ্ঞ বিচারপতি মহোদয়ের নিকট ভূয়সী প্রশংসা এবং সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে জেলা আইজীবী সমিতির সদস্য হিসেবে, জামালপুর পুর জেলা আইনজীবী দায়িত্ব প্রাপ্ত বিজ্ঞ আইনজীবী রিশাদ রেজওয়ান জানান, অত্র আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মহোদয়ের মামলা নিষ্পত্তির হার সর্বোচ্চ এবং বিজ্ঞ বিচারক মহোদয়ের এই আদালতে সন্ধ্যা অবধি বিচারকার্যক্রম চলে। জেলার সর্বত্র এই আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হয় মর্মে সংবাদ প্রচারিত হয়ে যায়। বিশেষ করে বিজ্ঞ বিচারক মহোদয় পুরাতন মামলা গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির জন্য অল্প সময়ের ব্যবধানে ধার্য তারিখ রেখে সেগুলো নিষ্পত্তিতে সর্বাত্তক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে অনেক গুলো পুরাতন মামলা চূড়ান্ত শুনানীর পর্যায়ে রয়েছে এবং বিজ্ঞ বিচারক মহোদয় নিজেই তদারকি করে এবং নিজেই তারিখ দেন। এছাড়া অত্র আদালতে বিচার প্রার্থী জনগণ মামলা নিষ্পত্তিতে তাদের ঊচ্ছ¦সিত সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি আরোও বলেন, আমরা যারা নিয়মিত আদালতে মামলা পরিচালনা করি তাদের কাছে সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের কার্যক্রমের ব্যাপারে এক বিরাট আস্থা ও সন্তোষ্টি প্রকাশ পায়। বিজ্ঞ বিচারক মহোদয় রাত দিন পরিশ্রম করেন। বিশেষ করে অত্র আদালত হতে কোন সাক্ষী ফেরত পাঠানো হয় না। বিগত ৪০ বছরের ইতিহাসে জামালপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে বিগত ৩ মাসে মাত্র ৫৬ কার্য দিবসে ৪৪১ টি মামলা নিষ্পত্তি হয়। যেটা অতীতের সকল পর্যায়ের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যায়। আমরা আশা করি এই ভাবে মামলা নিষ্পত্তি হলে জনগণের নিকট বিচার ব্যাবস্থা সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বিচার সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে যাবে। সমগ্র জেলায় ইতোমধ্যে সিনিয়র সহকারী জজ আদালত এর রোল মডেল হিসেবে স্থাপিত হয়েছে। আদালত সূত্রে জানা যায়, জামালপুর জেলার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ জনাব মোঃ জুলফিকার আলী খাঁন, জামালপুর জেলায় মামলা নিষ্পত্তিতে অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছেন। তিনি ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ভয়েস রেকর্ডের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি করেন। পুরাতন সকল মামলা বর্তমানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জেলা জজ মহোদয় নিষ্পত্তি করেন। সেই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন আদালতে বিশেষ করে সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা নিষ্পত্তিতে বর্তমানে অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে এবং বিচার সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা তাদের আস্থা এবং নির্ভরতার জায়গা হিসেবে অত্র আদালতে তাদের কার্যক্রমের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।