বকশীগঞ্জে দুই ইউপিতে নৌকা ডোবাতে চান স্বতন্ত্র প্রার্থীরা!

জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু, বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় জমে উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। চতুর্থ ধাপে বকশীগঞ্জ সদর ও বাট্টাজোড় ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী ২৬ ডিসেম্বর এই দুই ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

দীর্ঘ ১০ বছর পর এই দুই ইউনিয়নে নির্বাচন হওয়ায় ভোটারদের মাঝে নির্বাচনী আমেজ পুরোদমে শুরু হয়েছে।

এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অংশ নিয়েছেন।

গত ৭ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রত্যেকটি প্রার্থী প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রতিটি ইউনিয়নেই সকল প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদের প্রার্থীরা মাঠে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আলমগীর কবির আলমাছ। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলমাছকে ঠেকাতে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছে আরো ৫ প্রার্থী। বতর্মান চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন এলবাট, আবু মোতালেব মন্ডল, মহসিন আলী রিপন, মো. সুমন, জাহাঙ্গীর আলমসহ আরো ৫ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী মাঠ চুকিয়ে বেড়াচ্ছেন সমানতালে। এই ইউনিয়নে বিএনপির তিনজন প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপির এক প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা।

এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের কোন বিদ্রোহী না থাকায় ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলমগীর কবির আলমাছ। তিনি তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নৌকার ভোট চেয়ে যাচ্ছেন। তবে ভোটের মাঠে নৌকার প্রার্থীকে ধাক্কা দিতে মাঠ কাপাচ্ছেন বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু মোতালেব মন্ডল। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। এই ইউনিয়নে আলমাছ-মোতালেবকে নিয়েই চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

অপরদিকে বাট্টজোড় ইউনিয়নে ত্রিমুখি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় ভোটারগণ। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোখলেসুর রহমান জুয়েল তালুকদার ছাড়াও রয়েছে আওয়ামী লীগের তিন বিদ্রোহী প্রার্থী। মাঠে রয়েছেন জাতীয় পার্টির মো. মুছা মিয়া, বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতালেব সরকারসহ আরো দুই জন। সবাই কাজ করছেন নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে নৌকা ডোবানোর জন্য।

এই ইউনিয়নে শক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য প্রবীণ নেতা আমজাদ হোসেন। এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মীর মো. জহির উদ্দিন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নাজমুল হক ফরিদ বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন।

মূলত নৌকা প্রার্থী মোখলেসুর রহমান জুয়েল তালুকদার, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমজাদ হোসেন ও জাতীয় পার্টি মুছা মিয়ার মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা রয়েছে। যে যার যার মত দিন-রাত পরিশ্রম করছেন নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য।

আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জয়ী করতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগ, উপজেলা শ্রমিক লীগ, উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা নৌকার পক্ষে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। ঐতিহ্যবাহী তালুকদার বাড়ির সন্তান জুয়েল তালুকদার দলের বাইরে পরিবারের ইমেজকে ভোটারের সামনে তুলে ধরে ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন।

প্রার্থীরা তাদের বিজয় নিশ্চিত করতে আঞ্চলিকতা, আত্মীয়তা, বংশের পরিচয়, নিজেদের ব্যক্তি ইমেজকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠে ময়দানে ভোট আয়ত্বে আনার চেষ্টায় বিভোর হয়ে পড়েছেন। তবে দিন শেষে ভোটের মাঠে নৌকা ডোবাতে চেষ্টা করে যাবেন বিদ্রোহীসহ সকল স্বতন্ত্র প্রার্থী।