উগ্র-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী অপব্যাখ্যা দিয়ে বিদ্বেষ ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল কাদের

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, একটি উগ্র-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে ধর্মপ্রিয় মানুষের মনে বিদ্বেষ ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘মুজিব বর্ষ উপলক্ষে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অনভিপ্রেত ও উদ্দেশ্যেমূলক বক্তব্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও এদেশের আবহমান কালের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতি চ্যালেঞ্জ। তারা ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে ধর্মপ্রিয় মানুষের মনে বিদ্বেষ ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে।’

ওবায়দুল কাদের ৩০ নভেম্বর বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত ২২তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, শিল্প চর্চা মনের খোরাক জোগায়। শিল্প কখনো প্রেম কখনো দ্রোহ। কখনো সবুজ কখনো লাল। রং তুলি হাতে এদেশের শিল্পীরা ’৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলেন। হানাদারদের নৃশংসতা তুলে এনেছিলেন ক্যানভাসে। দেশীয় সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশ, মুক্তমনের প্রবাহ নিশ্চিত করা এবং নিয়ন্ত্রিত সংস্কৃতির বৃত্ত ভাঙ্গার জন্যই শিল্পীরা যুদ্ধ করেছিলেন। অথচ আমরা এখন কী দেখছি? একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী শিল্পকলার শক্তিশালী মাধ্যম ভাস্কর্যের বিরোধীতায় নেমেছে। মুর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়। মুর্তি বা প্রতিমা তৈরি হয় উপাসনার জন্য আর ভাস্কর্য নন্দত্বের অংশ।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছিলেন রাজনীতির কবি, বক্তৃতায়-বাগ্মিতায় তিনি অমর। এই বাংলার জনমানুষের জীবনদলের শিল্পী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি ছিলেন বাঙালির সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। বঙ্গবন্ধু সংস্কৃতির ভাঙ্গাসেতু মেরামত করে তৈরি করেছিলেন অটুট সেতুবন্ধ।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মুজিববর্ষে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য এদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির উপর চ্যালেঞ্জ। অন্য কোন পথ ও ইস্যু না পেয়ে ধর্মীয় ইস্যুকে সামনে এনে ধর্মীয় সহনশীলতা বিনষ্টের যে কোন অপচেষ্টা সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে।

ইতিহাসের মীমাংসিত বিষয় নিয়ে কোন আলোচনা হতে পারে না জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ বিষয়ে কোন আপোষ নেই। সরকারের সরলতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সংবিধান ও রাষ্ট্রবিরোধী কোন বক্তব্য বরদাশত করা হবে না।

শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুল মান্নান ইলিয়াস, চিত্রশিল্পী সহিদ কবির ও শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিম। পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।