ইউএনও’র হস্তক্ষেপে উদ্ধার পেল কিশোরী

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলোয়ার হোসেন ও আন্তাজ আলী। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পণ্ড করে দিয়েছেন একটি বাল্যবিয়ে। ৪ জুন রাতে বারো বছর বয়সী এতিম এক কিশোরীকে বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন স্থানীয় এক কাঁচামাল ব্যবসায়ী। ওই ব্যবসায়ীর নাম দেলোয়ার হোসেন (৪০)। এ নিয়ে তিনি চতুর্থবারের মতো বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন। এলাকাবাসী জানায়, ওই কিশোরীর দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে এ বিয়ে করার কুমতলব করেন দেলোয়ার। কিন্তু সব কিছু ভেস্তে দেন ইউএনও আরিফুর রহমান। ওইদিন রাতে উপজেলার গোজাকুড়া কয়ারপাড় গ্রামে কিশোরীর বাড়ি পৌঁছে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তিনি বাল্যবিয়ে করার অভিযোগে দেলোয়ারকে এক বছর দশ মাস কারাদণ্ড দেন। সেই সাথে দেলোয়ারের বড় ভাই আন্তাজ আলীকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, উপজেলার গোবিন্দনগর গ্রামের কাঁচামাল ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন এ পর্যন্ত তিনটি বিয়ে করেছেন। তবে বনিবনা না হওয়ায় আগের সব বউদের সাথে বিচ্ছেদ হয়। কিছুদিন আগে চতুর্থবারের মতো বিয়ে করার জন্য কয়ারপাড় গ্রামের পিতাহারা বারো বছর বয়সী এক দরিদ্র কিশোরীকে বিয়ে করার জন্য ফন্দি আটেন। এক পর্যায়ে কিশোরীর মা-নানীকে পটিয়েও ফেলেন দেলোয়ার। এক পর্যায়ে বিয়ে করতে ৪ জুন রাতে কনের বাড়ি যায় বর দোলোয়ার ও তার বড় ভাই আন্তাজ আলী। কাজী নিয়ে এসে কাবিননামা তৈরি করেন। ওই অবস্থায় ইউএনও পুলিশ সমেত বিয়ে বাড়িতে হাজির হন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম ৫ জুন দুপুরে বলেন, দণ্ডপ্রাপ্তদের ঘটনার রাতেই জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে কাজীসহ কিশোরীর পরিবারের সবাই পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানান।

এ সম্পর্কে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম আরিফুর রহমান গণমাধ্যমাকর্মীদের জানান, দেলোয়ারের বাল্যবিয়ের ঘটনায় তাকে এক বছর দশ মাস এবং তার বড় ভাই আন্তাজ আলীকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।