সাহপুরে শ্লীলতাহানির শিকার নবম শ্রেণির ছাত্রী, মামলা তুলে নিতে হুমকি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুর শহরের সাহপুর রেলকলোনি এলাকায় এক ফলব্যবসায়ীকে মারধর, বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুর এবং তার নবম শ্রেণিপড়ুয়া মেয়েকে মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ২৬ এপ্রিল মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করলেও এখনো পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উপরন্তু মামলা তুলে নিতে নির্যাতনকারীরা হুমকি দিচ্ছে বলে মেয়েটির বাবা অভিযোগ করেছেন।

নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির শিকার ওই মেয়েটি জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তাদের বাসা জামালপুর শহরের সাহপুর রেলকলোনি এলাকায়। তার বাবা একজন ক্ষুদ্র ফলব্যবসায়ী। তার বাবার অভিযোগ, তার মেয়ে ২৫ এপ্রিল দুপুরে নানিবাড়ি থেকে নিজ বাসায় ফিরছিল। এ সময় সাহপুর এলাকার স্বেচ্ছাসেবকলীগনেতা মো. জাহিদুল ইসলাম রাজু ও তার সহযোগীরা তার মেয়েকে কটূক্তি করায় সে প্রতিবাদ করলে তাকে ভয়ভীতি দেখায় এবং পরে দেখে নিবে বলে হুমকি দেন। মেয়েটি বাসায় ফিরে এ ঘটনা তার বাবাকে জানায়।

কিছুক্ষণের মধ্যেই জাহিদুল ইসলাম রাজু, দেলোয়ার হোসেন ও মো. পারভেজসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো ২-৩ জন লোক মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। তারা মেয়েটির বাবাকে মারধর করার সময় মেয়েটি ফেরাতে গেলে হামলাকারীরা তাকেও মারধর করে এবং তার গায়ের জামা টেনে ছিড়ে ফেলে শ্লীলতাহানি ঘটায়। হামলাকারীদের একজন মেয়েটির বাম বাহুতে খামছা দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে দেন। এ সময় মেয়েটি মাটিতে পড়ে গেলে তাকেও পিটিয়ে আহত করা হয়। হামলাকারীরা এতেও ক্ষান্ত হননি। তারা মেয়েটির ঘরের টিনের বেড়া, চাল ও দরজা ভাংচুর করে। এ সময় প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে হামলাকারীদের হাত থেকে তাদেরকে রক্ষা করেন। ওই দিনই আহত বাবা ও মেয়ে জামালপুর সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ ঘটনার পরের দিন ২৬ এপ্রিল দুপুরে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে একই এলাকার মো. জাহিদুল ইসলাম রাজু, দেলোয়ার হোসেন ও মো. পারভেজসহ অজ্ঞাত আরো দুই-তিনজনকে আসামি করে জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বাদী আসামিদের বিরুদ্ধে তাকে মারধর, মেয়েটিকে যৌনপিড়নসহ মারধর, বাড়িঘর ভাংচুর ও স্বর্ণের চেইন চুরি অভিযোগ এনেছেন।

এদিকে মামলা দায়েরের তিনদিন হলেও মামলাটির একজন আসামিকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। উপরন্তু মামলাটির আসামি ও আসামি পক্ষের লোকজনরা মামলা তুলে নিতে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে বাদী অভিযোগ করেছেন।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোশফিকুর রহমান ২৮ এপ্রিল বিকেলে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘মামলাটির সকল আসামি পলাতক থাকায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। তবে তাদেরকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’