ত্রাণ নিয়ে বিশৃংখলাসৃষ্টিকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে : ডিসি জামালপুর

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেছেন, ত্রাণ নিয়ে বিশৃংখলাসৃষ্টিকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। ১৩ এপ্রিল বিকেলে তার কার্যালয়ের সভাকক্ষে চলমান করোনাভাইরাস মোকাবেলায় কর্মহীন দরিদ্রদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক এ কথা বলেন।

সূত্র জানায়, সংবাদ সম্মেলনটি করোনাভাইরাস মোকাবেলায় কর্মহীন দরিদ্রদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ডাকা হলেও ১২ এপ্রিল সকালে জামালপুর শহরের মুকুন্দবাড়ি এলাকায় ত্রাণবাহী একটি ট্রাক থেকে বিপুল পরিমাণ ত্রাণের চাল ও আলু ছিনতাই হওয়ার ঘটনাটিও আলোচনায় স্থান পায়।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, শহরের মুকুন্দবাড়িতে রাস্তায় ট্রাক থেকে ত্রাণের চাল ও আলু ছিনতাইয়ের ঘটনাটি মূলত স্থানীয় কাউন্সিলরের সাথে কারো দ্বন্দ্বের জের ধরেই এই অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। কর্মহীন মানুষের মাঝে খাদ্যের অনেক চাহিদা থাকলেও নিছক ওই এলাকার কর্মহীনরা এ ঘটনা ঘটায়নি। তাদেরকে হয়তো কেউ সুযোগ করে দিয়েছেন। জেলার আর কোথাও এমন কোনো ঘটনার খবর আসেনি।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্মহীন দরিদ্রদের তালিকা করে সারা জেলায় ত্রাণ বিতরণ করে আসছি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমি এবং প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘরে ঘরে খাদ্য পৌঁছে দিচ্ছি। আমাকে ফোন করলেও দ্রুত সময়ের মধ্যে ত্রাণের ব্যবস্থা করছি। মুকুন্দবাড়ির ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা প্রশাসক আরো জানান, জেলার সাতটি উপজেলা মিলে আমরা দুই লাখ ৪০ হাজার দরিদ্র পরিবারের মাঝে সরকারি ত্রাণ সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি। আজ পর্যন্ত জেলায় ৮১ হাজার ৪০০ পরিবারের মাঝে ৮১৪ দশমিক ৩৩ মেট্রিক টন চাল, ৩১ হাজার ১৫০টি পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে তিন লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকা এবং চার হাজার পরিবারের মাঝে শিশু খাদ্যের জন্য নগদ চার লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া জেলায় মোট চাল মজুদ রয়েছে ২৯ দশমিক ৬৭ মেট্রিক টন এবং নগদ অর্থ মজুদ রয়েছে দুই লাখ ৪৫ হাজার টাকা। ত্রাণ বিতরণে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন ত্রাণ বিতরণে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে কর্মহীন দরিদ্রদের তালিকা তৈরি করে এখন থেকে রাতে ঘরে ঘরে গিয়ে ত্রাণ বিতরণের পরামর্শ দেন। এজন্য পুলিশ সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে পাশে থাকবে। তার পরামর্শ অনুযায়ী দিনের বেলার পরিবর্তে রাতে ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তার ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস এবং এ ব্যাপারে একাধিক টিম করে ত্রাণ বিতরণ করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জেলায় কর্মরত বেশ কয়েকজন সাংবাদিক অংশ নেন।