বাঁশচড়ায় কিশোরীর আত্মহত্যা

কিশোরীর মরদেহ। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুর সদরের বাঁশচড়া ইউনিয়নে ঘরের ধর্ণায় ফাঁসিতে ঝুলে সোনিয়া খাতুন (১৪) নামের এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। ৩১ মার্চ ওই ইউনিয়নের পশ্চিম জামিরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিকেলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় নরুন্দি তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে গেছে। বয়স্ক এক ব্যক্তির সাথে বিয়ের আলোচনায় সে অভিমান করে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে পুলিশ ও প্রতিবেশীরা ধারণা করছেন।

ওই কিশোরীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর সদরের বাঁশচড়া ইউনিয়নের পশ্চিম জামিরা গ্রামের মো. সোলায়মানের মেয়ে সোনিয়া খাতুন। সোনিয়ার সাতদিন বয়সের সময় তার মা ফেরদৌসী তার বাবাকে তালাক দেন। এরপর সোলায়মান তার দ্বিতীয় স্ত্রী লাবনীকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন এবং রিকশাচালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। সোনিয়া জামিরা গ্রামে তার দাদির সাথে থাকত।

৩১ মার্চ দুপুরে তার দাদি ছালেমা দুপুরের ভাত রান্না করে নাতনি সোনিয়াকে খাওয়ার জন্য ডাকতে যান। এ সময় ঘরের দরজা বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করেও ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের জানান তিনি। প্রতিবেশী কয়েকজন গিয়ে দরজা ভেঙে দেখতে পান সোনিয়া ঘরের ধর্ণার সাথে ফাঁসিতে ঝুলে আছে। পরে তাকে ধর্ণা থেকে মৃত অবস্থায় নামিয়ে পুলিশে খবর দেন তারা। তার পরনে ছিল সালোয়ার কামিজ।

বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নরুন্দি তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সজিব রহমান পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। মরদেহের সুরতহাল তৈরি ও প্রাথমিক তদন্ত শেষে বিকেল ৫টার দিকে তারা মরদেহ উদ্ধার করে তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে যান। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সোনিয়ার দাদি বৃদ্ধ ছালেমা এ প্রতিবেদককে জানান, দুপুরে তিনি রান্না ঘরে যাওয়ার আগে শোবার ঘরে সোনিয়াকে জোহরের নামাজ পড়ে কোরআন পাঠ করতে দেখেছেন। রান্না শেষে খাওয়ার জন্য ডাকতে গিয়ে দরজা বন্ধ দেখতে পান তিনি। কেন সোনিয়া আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে সে সম্পর্কে তিনি কিছুই বলতে পারছেন না।

তবে প্রতিবেশীরা জানান, বয়স্ক এক ব্যক্তির সাথে সোনিয়ার বিয়ের আলাপ আলোচনা চলছিল। ৩০ মার্চ রাতে কিছু লোকজন ওই বাড়িতেও এসেছিল। বরের বয়স বেশি দেখে সোনিয়া রাজি হয়নি। বিয়ের বিষয় নিয়েই হয়তো সোনিয়া অভিমান করে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে তাদের ধারণা।

নরুন্দি তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সজিব রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ওই কিশোরী ঘরের ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বয়স্ক ব্যক্তির সাথে বিয়ের আলোচনা নিয়ে হয়তো সে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। মরদেহের সুরতহালে গলায় ফাঁসির দড়ির টানে ক্ষত ছাড়া আর কোনো আঘাতের আলামত পাওয়া যায়নি। কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে তদন্ত কেন্দ্রে আনা হয়েছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা প্রশাসনের কাছে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করতেছেন বলে জানিয়েছেন। তারা অনুমতি না পেলে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হবে।’