মায়ের বুকের দুধের গুরুত্ব অনুধাবনে জামালপুরে মাতৃ আড্ডা

মাতৃ আড্ডায় আলোচনায় অংশ নেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম

মায়ের বুকের দুধ শিশুর রোগ প্রতিরোধ, স্বাভাবিক বিকাশ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বুকের দুধের এই গুরুত্ব অনুধাবনের লক্ষ্যে ৫ আগস্ট জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুরে অনুষ্ঠিত হয় মাতৃ আড্ডা। উন্নয়ন সংঘের এসআরএইচআরএমএনএইচ প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠিত মাতৃ আড্ডায় মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক উম্মে ওয়ায়েজুন লাকী।

অর্ধ শতাধিক মাদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান মাতৃ আড্ডায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম, উপজেলা ব্যবস্থাপক আরজু আহম্মেদ, ইউএফ সোহেল রানা, পরিবার কল্যাণ সহকারী মল্লিকা পারভীন, সিএইচসিপি আকলিমা বেগম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ২৪ জন গর্ভবতী মা ও তাদের ২২ জন আত্মীয় মাতৃ আড্ডায় অংশ নেন। বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত মাতৃ আড্ডায় মাদের কাছ থেকে বিভিন্ন কুসংস্কার ও সমস্যার কথা উঠে আসে। আলোচকগণ মায়ের দুধের বিকল্প অন্য কোনো খাদ্য হতে পারে না বলে উল্লেখ করেন। তারা বলেন, বাজারে গুঁড়ো দুধ শিশুর জন্য খুবই বিপদজনক। এই দুধে এমন কিছু ক্ষতিকারক পদার্থ আছে যা শিশু মৃত্যু ঝুঁকি পর্যন্ত সৃষ্টি করতে পারে। তারা বলেন, শিশুর ভূমিষ্ট হবার পর পরই শাল দুধ খাওয়াতে হবে। শিশুর ছয় মাস বয়স পর্যন্ত পানি পর্যন্ত খাওয়ানোর দরকার নেই। ছয় মাসের পর থেকে বুকের দুধের পাশাপাশি শিশু উপযোগী নরম খাবার তৈরি করে শিশুকে খাওয়াতে হবে। মায়ের বুকের দুধে সবধরনের রোগ প্রতিরোধক উপাদান থাকে।

মাতৃ আড্ডায় অংশগ্রহণকারী মা ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

মাতৃ আড্ডায় বুকের দুধের পাশাপাশি গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী স্বাস্থ্যসেবা (এএনসি ও পিএনসি) নিয়মিতকরণ, প্রসব পরিকল্পনা তৈরি করা, নবজাতকের যত্ন ও সুরক্ষা নিশ্চত করা, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করা, বন্যা পরবর্তী রোগ ব্যাধি প্রতিরোধে করণীয়, পুষ্টি সচেতনতাসহ বিভিন্ন উদ্বুদ্ধমূলক আলোচনা করা হয়। এছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় এবং ছেলেধরা গুজববিরোধী আলোচনা করা হয়।

উপস্থিত মা’রা আড্ডা থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান তাদের জীবনে কাজে লাগানোর অঙ্গীকার করেন। বিশেষ করে বুকের দুধ খাওয়ানো, প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব অর্থাৎ কমিউিনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, মাতৃসদন অথবা জামালপুর জেনারেল হাসপাতলে গিয়ে প্রসব করাবেন বলে গর্ভবতী মা ও তাদের আত্মীয়রা অঙ্গীকার করেন।

ইউনিসেফ এর সহায়তায় উন্নয়ন সংঘ জামালপুর জেলার সাতটি উপজেলায় এই মাতৃ আড্ডার আয়োজন করবে বলে জানায় আয়োজক সংস্থা। উন্নয়ন সংঘ জামালপুরে মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্য, যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার উন্নয়নের জন্য কমিউনিটিভিত্তিক কার্যক্রম (আাইএমএসআরএইচআরএমএনএইচ) বাস্তবায়ন করছে।