শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ঝিনাইগাতীতে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবল বেগে মহারশি নদীর দিঘীরপাড় এলাকার নদীর বাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করেছে বিভিন্ন এলাকায়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত তিন দিনের টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গত ৮ জুলাই সকাল থেকে ১০ জুলাই বিকাল পর্যন্ত ঝিনাইগাতীতে থেমে থেমে ও মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় এ গ্রামগুলো প্লাবিত হয়। প্লাবিত ইউনিয়নগুলো হচ্ছে ঝিনাইগাতী সদর, ধানশাইল, গৌরীপুর, হাতিবান্ধা ও মালিঝিকান্দা। এসব ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কাঁচা ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, রোপা আমন ধানের বীজতলা, পুকুরের মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। ঢলের পানিতে কিছুসংখ্যক মানুষ ও গৃহপালিত পশু পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চাঁন বলেন, গত তিন ধরে ঝিনাইগাতীতে থেমে থেমে ও মুষলধারে বৃষ্টি হয়। সেই সাথে সীমান্তের ওপারের উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবল বেগে মহারশি নদীর দিঘীরপাড় এলাকার নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ওই এলাকার বাসিন্দা শাহজাহানের বাড়ি-ঘর ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া তার ইউনিয়নের বড়গাডুবি, কালিনগর, সারিকালিনগর, দড়িকালিনগর, দীঘিরপাড়, চতল, লঙ্কেশ্বর, পাইকুড়া, জরাকুড়া, কোনাগাঁও গ্রাম ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

ধানশাইল ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল বলেন, পাহাড়ি ঢলে সোমেশরী নদীর পানি বেড়ে তার ইউনিয়নের নয়াপাড়া, দাড়িয়ারপাড়, কান্দুলী, মাঝাপাড়া, বাগেরভিটা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে কাঁচা ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, রোপা আমন ধানের বীজতলা, পুকুরের মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী রয়েছে কিছু মানুষ।

ঝিনাইগাতীতে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবল বেগে মহারশি নদীর দিঘীরপাড় এলাকার নদীর বাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করেছে বিভিন্ন এলাকায়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

গৌরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মন্টু বলেন, মহারশি নদীর বনগাঁও এলাকার নদীর বাঁধ ভেঙে জিগাতলা, বনগাঁও, খাপাড়া প্লাবিত হওয়ায় রোপা আমন ধানের বীজতলা, পুকুরের মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে।

মালিঝিকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম তোতা বলেন, হাঁসলিবাতিয়া, রাঙ্গামাটিয়া, দেবত্তরপাড়া, বানিয়াপাড়া, জুলগাঁও প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার আমন ধানের বীজতলা ও পুকুরের মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ঢলের পানিতে ১৫ হেক্টর রোপা আমন ধানের বীজতলা আংশিক নিমজ্জিত আছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু সিরাজুস সালেহীন বলেন, আমি বেশ কিছু এলাকা পরির্দশন করেছি, কিছু এলাকার পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ বেশ কিছু এলাকা পরির্দশন করে বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, দিঘীরপাড় এলাকার নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ওই এলাকার বাসিন্দা শাহজাহানের বাড়ি-ঘর ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত সহায়তা প্রদান করা হবে।