সরিষাবাড়ীতে স্বেচ্ছাশ্রমে হচ্ছে কাঠের সেতু

গ্রামবাসীদের স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে কাঠের সেতু নির্মাণ কাজ। ছবি : মমিনুল ইসলাম কিসমত

মুমিনুল ইসলাম কিসমত, সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচির্ঠিডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় নিজেদের অর্থায়নে এবং স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে যমুনা নদীর শাখা নদীতে ৩২০ ফুট দীর্ঘ একটি কাঠের সেতু নির্মাণ কাজ হাতে নিয়েছে নদীর দুই পাড়ের গ্রামবাসীরা। দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘবে উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর সরিষাবাড়ী গ্রামে এই কাঠের সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, সাতপোয়া ইউনিয়নের চর সরিষাবাড়ী থেকে ঝালুপাড়া ঘাট পর্যন্ত চলাচলের রাস্তা ও সেতু না থাকায় স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ অন্তত ১২ হাজার গ্রামবাসীর নিত্যদিনের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ কারণে স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দারা নিজ অর্থায়নে ও নিজেদের বাড়ির আঙিনা বা বাগানের ইউক্যালিপটাস গাছ দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে সেখানে একটি কাঠের সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যে গত ২ এপ্রিল থেকে গ্রামবাসীরা সেখানে ৩২০ ফুট দীর্ঘ কাঠের সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করে দিয়েছেন।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সেতুটি নির্মাণে প্রায় ৭ শতাধিক গাছের পিলার লাগবে। এরপর উপরে চলাচল করতে আরও প্রচুর কাঠ লাগবে। বর্ষা মওসুমের আগেই সেতুটি নির্মাণ করতে চান তারা।

গ্রামবাসীদের স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে কাঠের সেতু নির্মাণ কাজ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

এই কাঠের সেতুর উদ্যোক্তাদের অন্যতম স্থানীয় আব্দুল আজিজ বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, সরিষাবাড়ী উপজেলার চর সরিষাবাড়ী, টাকুরিয়া, মালিপাড়া, মানিক পটল, বিন্যাফৈর ও কাজিপুর থানার কুমারিয়াবাড়ী, শালগ্রাম, শালদহ, চর সালালসহ প্রায় ১৫টি গ্রামের ২০ হাজার লোকের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। বর্ষা মওসুমে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় এই ১৫টি গ্রামের লোকেদের। মুমূর্ষু রোগীদের নিয়ে ২ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে সময় লেগে যায় প্রায় চার থেকে পাঁচ ঘন্টা। গত বর্ষা মৌসুমে প্রসব ব্যথা নিয়ে নদী পারাপার না হতে পেরে দু’জন গর্ভবতী মা মারাও গেছেন।

স্কুলছাত্র শিপন বলে, বর্ষা মওসুম এলেই আমরা বছরে প্রায় তিন চার মাস স্কুলে যেতে পারি না। এতে করে পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হয়। এই নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ হলে আমাদের জন্য অনেক উপকার হবে।’

এ ব্যাপারে সাতপোয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, আশা করা যায় আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই সেতু দিয়ে গ্রামবাসীদের চলাচল করতে পারবে। এই আদি চর সরিষাবাড়ী নামটিই সরিষাবাড়ী নামকরণ হয়। তাই চর সরিষাবাড়ী থেকে ঝালুপাড়া ঘাট পর্যন্ত সেতু ও চলাচলের রাস্তা করে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরিষাবাড়ী আসনের সংসদ সদস্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মো. মুরাদ হাসানের দৃষ্টি আর্কষণ করছি।’