প্রার্থিতা দাবির ভুয়া পেপার কাটিংয়ে ফেঁসে গেলেন হামিদ!

ভুয়া পেপারকাটিং সরবরাহকারী প্রতারক আব্দুল হামিদ। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠি ডটকম

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করতে এসে ফেঁসে গেছেন এক সময়ের ত্রাস আব্দুল হামিদ। ২৭ জানুয়ারি দুপুরে শেরপুর শহরের নিউমার্কেট ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের সম্মেলন কক্ষে জেলায় কর্মরত সংবাদকর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে দৈনিক মানবকন্ঠসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে তার পক্ষে প্রকাশিত সংবাদের ভুয়া পেপার কাটিং সরবরাহ করে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন হামিদ।

আব্দুল হামিদের সরবরাহ করা জাতীয় দৈনিক মানবকণ্ঠ ও যুগান্তর পত্রিকায় শেরপুর প্রতিনিধির বরাদ দিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি তারিখে “শ্রীবরদী উপজেলার সফল সমাজসেবক আব্দুল হামিদ সোহাগ” শিরোনামে তিন কলামের একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া একই শিরোনামে বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় গত বছরের ১০ মার্চ মাসে প্রকাশিত সংবাদের অংশ বিশেষ এবং দৈনিক সমকালে ১৮ জানুয়ারি “এক সময়ের ঢাকার ত্রাস সোহাগ এখন কোথায়” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের অংশ বিশেষের অনুলিপি উপস্থিত সংবাদকর্মীদের কাছে দেওয়া হয়।

তবে ওইসব তথ্য যাচাই বাছাই করে জানা যায়, ওই দিনগুলোতে উল্লিখিত পত্রিকায় এই ধরনের কোন সংবাদ প্রকাশিত হয়নি।

দাবিকৃত ওইসব পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, সোহাগ ১৪টি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। আদালতের রায়ে তাকে ১৪ বছর কারাবাস করতে হয়েছে। এ ছাড়া রায়ে তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হলেও পরবর্তীতে তাকে মামলাগুলো থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

হামিদের দাবি, বিগত সময়ের ১৪টি মামলার সবটিতেই তার খালাস হয়েছে। তবে বর্তমানে আওয়ামী রাজনীতি করতে গিয়ে নতুন করে আরো ৪টি মামলার আসামি হন।

তথ্য নিয়ে জানা যায়, হামিদের পুরো নাম আব্দুল হামিদ সোহাগ। সে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ভায়াডাঙা চক্রপুর গ্রামের মৃত নয়মুদ্দিনের ছেলে। চার ভাই বোনের মধ্যে সে সবার ছোট এবং তার বড় তিন ভাই প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা। পরবর্তীতে সে বিভিন্নভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন। ঢাকা ও ময়মনসিংহ এলাকায় তার বেশ দাপট ছিলো বলেও জানা যায়। সোহাগের বিরুদ্ধে তার নিজ এলাকার একটি মাদরাসার পরীক্ষা কেন্দ্র গঠন নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগও রয়েছে।

সোহাগ বলেন, পরিবারের বড় তিন ভাই মুক্তিযোদ্ধা হবার পরেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ তাকে মূল্যায়ন করেনি। উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগ পর্যায়ে তার কোন পদ নেই। তৃণমূলের পছন্দে তিনি গতবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস-চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হন। এবার তিনি শ্রীবরদী উপজেলার চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি আরো বলেন, জীবনের দীর্ঘ সময় কারাবাসে ছিলাম। এখন অন্ধকার পথ থেকে ফিরতে চাই। তাই নৌকার মাঝি হিসেবে মনোনয়ন দিয়ে আলোতে আসার সুযোগ চান প্রধানমন্ত্রীর কাছে।