বিএনপি প্রার্থী মামুনের প্রচারণায় বাঁধা, সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠি ডটকম

জামালপুর-৫ (সদর) আসনের বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আইনজীবী শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন তার এবং তার নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশি অভিযান ও প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকরা ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণায় বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। ১৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় জামালপুর শহরের নয়াপাড়া কলেজ রোডে ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন এসব অভিযোগ করেন।

এদিকে এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বলছেন তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে এ আসনের আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বলছেন এসব অভিযোগ তার এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপির মিথ্যাচার মাত্র।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রার্থী শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. মোজাফফর হোসেনের কর্মী-সমর্থকরা ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতি পদে পদে বাঁধার সৃষ্টি করছে। তারা ইতিমধ্যে দিগপাইত ইউনিয়নের প্রচার কেন্দ্রে তালা ঝুলিয়ে ওই ইউনিয়নের প্রচার কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর দুপুরে কেন্দুয়া ইউনিয়নের কেন্দুয়া কালিবাড়ী বাজারে ধানের শীষ প্রতীকের প্রচারণার গাড়ির বহরে হামলা চালিয়ে তিনটি মোটরসাইকেল ভাংচুর ও ৫/৬ জন নেতা-কর্মীকে পিটিয়ে আহত করেছে। আহতদের মধ্যে সদর উপজেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি মো. বায়েজীদকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় রাতে সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশ ও সদর থানার পুলিশ আমার বাসা এবং আমার দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। অন্যদিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা প্রতি রাতে ৪০ থেকে ৫০টি মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দিয়ে ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলাসহ নানাভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। এসব বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে এবং মৌখিকভাবে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।’

শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, ‘এই নির্বাচনে আমার গণজোয়ার দেখে পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নির্বাচনের কার্যক্রম বাঁধাগ্রস্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। প্রশাসনের এরূপ পক্ষপাতিত্ব আচরণে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু না হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।’

এদিকে এ আসনের আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন বিএনপি প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলনে করা বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, ‘বিএনপি প্রার্থী আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করছেন সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। তারা এখন নালিশ পার্টিতে পরিণত হয়েছে। তাদের কাজই হলো রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে নালিশ করা। পুলিশের কাছে নালিশ করা। অ্যাম্বেসিতে নালিশ করা। যে দলের কর্মী-সমর্থক কম, অনেক কোন্দল আছে, যাদের কোনো ভিত্তি নেই, জনসমর্থন নেই, তারা এখন মিথ্যা অভিযোগ করে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে মাত্র। আমি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সাথে নিয়ে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জামালপুর সদরের প্রতিটি এলাকায় ভোটার জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছি। আমার এবং আমাদের কোনো কর্মী-সমর্থকদের দ্বারা কোথাও তো কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’

বিএনপি প্রার্থীর এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, ‘সদর আসনের বিএনপির প্রার্থী আমার কাছে যেসব অভিযোগ করেছেন তার সবগুলোই আমি নির্বাচনী তদন্ত কমিটিকে দিয়েছি। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি।’