জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় পানি প্রবাহ বন্ধ করে দশানী নদীতে নির্মিত দুটি বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। ২ মে শুক্রবার বিকালে বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে চরআইরমারী এবং খাপড়াপাড়া গ্রামে নির্মিত বাঁধ দুটির অপসারণ করা হয়।
এর ফলে স্বস্তি ফিরেছে উজানের ২০ গ্রামের মানুষের মধ্যে। এতে রক্ষা পেয়েছে শত শত বিঘা জমির আধাপাকা ধান। তবে হতাশা ব্যক্ত করেছেন নদীপাড়ের মানুষ। এক দিকে উচ্ছ্বাস দেখা দিলেও অন্যদিকে কাল মেঘের ছায়া দেখছেন নদীপাড়ের মানুষেরা।
জানা গেছে, সম্প্রতি দেওয়াগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের খাপড়াপাড়া ও সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চরআইরমারী গ্রামের মানুষ দশানী নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ করে পাল্টা পাল্টি দুটি বাঁধ নির্মাণ করেন। নদী ভাঙন রোধে সরকারি কোন উদ্যোগ না থাকায় স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের মানুষ নিজেদের অর্থায়নে বাঁধ দুটি নির্মাণ করেন। বাঁধ নির্মাণের ফলে সাধুরপাড়া, বগারচর ও বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের ফসলি জমির ধান ক্ষেত তলিয়ে যায়।
বাঁধ নির্মাণ নিয়ে উজানের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা উপজেলা প্রশাসনের কাছে বাঁধ দুটি অপসারণে লিখিত অভিযোগ করেন। এরই প্রেক্ষিতে ১ মে বৃহস্পতিবার বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন বাঁধ অপসারণে দশানী নদীতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন। পরে এলাকাবাসীর বাধার মুখে ফিরে আসেন প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ। বাঁধ অপসারণে বাধা দেওয়ায় দুই ব্যক্তিকে ছয় মাস করে জেল দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরদিন ২ মে বিকালে বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যস্থতায় স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পর বাঁধ নির্মাণকারী খাপড়াপাড়া ও চরআইরমারী এলাকাবাসী বাঁধ অপসারণে রাজি হন। পরে বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বাঁধ দুটি অপসারণ করা হয়। বাঁধ দুটি অপসারণের পর উজানের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা দেয়। তারা উপজেলা প্রশাসন , বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ ও উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান। অপরদিকে চরআইরমারী গ্রাম ও খাপড়াপাড়া গ্রামের মানুষের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা এ প্রতিবেদককে জানান, বাঁধ দুটি অপসারিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে ওই এলাকায় নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।