ছোটদের ইউরোতে স্পেনকে হারিয়ে শিরোপা জিতলো ইংল্যান্ড

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : অনুর্ধ্ব-২১ ইউরোপিয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জিতেছে ইংল্যান্ড। ৮ জুলাই অনুষ্ঠিত ফাইনালে স্পেনকে ১-০ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। গ্যারেথ সাউথগেটের সিনিয়র দল দীর্ঘদিন ধরে বড় কোন টুর্নামেন্টের যে অধরা শিরোপার অপেক্ষায় রয়েছে, সেই ব্যর্থতা ঘোচানোর পথে ছোটদের এই শিরোপা অবশ্যই আত্মবিশ্বাস যোগাবে। এর মাধ্যমে ১৯৮৪ সালের পর প্রথমবারের মত ছোটদের ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা ঘরে তুললো ইংল্যান্ড।

বাটুমির নাটকীয় ফাইনালে স্পেনের অধিনায়ক আবেল রুইজের ৯৯ মিনিটের পেনাল্টি বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন ইংল্যান্ড গোলরক্ষক ম্যানচেস্টার সিটির জেমস ট্রাফোর্ড। এই গোলটি হলে ম্যাচটি নিশ্চিত অতিরিক্ত সময়ে গড়াতো। এর মাধ্যমে পুরো টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের কোন গোল হজম না করার রেকর্ড ধরে রেখেছিলেন ট্রাফোর্ড। এর আগে প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে কোল পালমারের ফ্রি-কিক থেকে কার্টিস জোনসের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ইংলিশরা।

প্রিমিয়ার লিগের নতুন দল বার্নলিতে ১৯ মিলিয়ন পাউন্ডে যাবার দ্বারপ্রান্তে থাকা ট্র্যাফোর্ড বলেছেন, ‘আজ সকালে আমি সবাইকে বলেছি আমি আজ একটি বল সেভ করবো এবং সেটাই দলকে শিরোপা জেতাবে। যখন পেনাল্টির মুহূর্ত এলো শটটি রক্ষা করার ব্যপারে আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। আমরা দারুন একটি দল। আমাদের মধ্যে বিশ্বাস ছিল কোন দলই গোল দিতে পারবে না, আমরা সেটা করে দেখিয়েছি।’

জর্জিয়া ও রোমানিয়ায় যৌথভাবে আয়োজিত এবারের আসরে লি কার্সলির দল ছয়টি ম্যাচেই জয়ী হয়ে ইংল্যান্ডের সোনালী প্রজন্মকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবার বার্তা দিয়েছেন। অনুর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের ইউরোপীয়ান আসরেও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন থ্রি লায়ন্স। ২০১৭ সালে তারা অনুর্ধ্ব-১৭ ও অনুর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের শিরোপাও জয় করেছে।

বিরতির পর রুইজের গোলে স্পেন সমতা ফিরিয়েছিল। কিন্তু অফসাইডের কারনে তা বাতিল হয়ে যায়। ম্যাচ শেষের ২০ মিনিট আগে রুইজ ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি নষ্ট করেন। তার হেডটি অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ইংল্যান্ডও সুযোগ পেয়েছিল, জোনস ও নোনি মাদুয়েকের দুটি শট রুখে দিয়ে স্প্যানিশ গোলরক্ষক আরনাউ টেনাস বড় পরাজয় থেকে পাঁচবারের বিজয়ীদের রক্ষা করেছেন। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডকে শিরোপা উপহার দিয়েছেন ট্র্যাফোর্ড। রুইজের স্পট কিক রুখে দেবার পাশাপাশি ফলো-আপ শটে তিনি আইমার ওরোজকে হতাশ করলে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফরা উন্মাদনায় ভেসে উঠেন।

ম্যাচের নাটকীয়তা তখনো শেষ হয়নি। ১১০ মিনিটে দুই দলের দুই বদলী খেলোয়াড় মরগান গিবস-হোয়াইট ও এন্টোনিও ব্লাঙ্কো নিজেদের মধ্যে বিরোধে লাল কার্ড দেখেছেন। এর আগে ইংল্যান্ডের কোচিং স্টাফ দলের সদস্য, চেলসি ও আর্সেনালের সাবেক লেফট-ব্যাক এ্যাশলে কোলকেও লাল কার্ড দিয়ে ডাগ আউট থেকে বের করে দেয়া হয়।

পুরো ম্যাচটি মাঠে বসে উপভোগ করেছেন ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। দুই বছর আগে ইউরোর ফাইনালে তার দলের পরাজয়ের হতাশা কিছুটা হলেও হয়তোবা ছোটরা ঘুচিয়ে দিতে পেরেছে। এনিয়ে তৃতীয়বারের মত অনুর্ধ্ব-২১ ইউরোর শিরোপা জেতার কৃতিত্ব দেখালো ইংল্যান্ড। এর আগে ১৯৮২ ও ১৯৮৪ সালে পরপর দুটি শিরোপা ঘরে তুলেছিল ইংলিশরা।