প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে : তথ্যমন্ত্রী

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, চলতি সরকারই আগামী নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে এবং প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

তিনি ৮ জুন দুপুরে রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিনেট ভবন মিলনায়তনে বিশ্ব সমুদ্র দিবস উপলক্ষে ঢাবি সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকরা ‘বিএনপির পক্ষ থেকে এখন নির্বাচনকালে নিরপেক্ষ সরকারের দাবি তোলা হয়েছে’ এমন প্রসঙ্গ তুললে এ কথা বলেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তো আন্তর্জাতিকভাবে কারো সমর্থন পায়নি। তাই এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাদ দিয়ে ‘নিরপেক্ষ’ সরকারের কথা বলছে। তারা যে সমস্ত দেশের হাতে-পায়ে ধরে, সে সকল দেশে যেভাবে চলতি সরকার নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে, আমাদের দেশেও ঠিক তাই হবে।’

সম্প্রতি বিদ্যুৎ সরবরাহে সময়ে সময়ে ছেদ নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবরা বড় গলায় কথা বলেন, অথচ তারা মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারে নাই, বিদ্যুৎ কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে। মানুষকে বিদ্যুৎ দেবে বলে ছেলে-ভোলানো চকলেট আর মোয়ার মতো শুধু বিদ্যুতের খাম্বা লাগিয়েছে। আমরা মানুষকে বিদ্যুৎ দিয়েছি, মানুষের অভ্যাস পরিবর্তন হয়েছে, দেশ পরিবর্তন হয়েছে, শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুতের ব্যবহার এখন বহুমাত্রিক।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন ৩ হাজার ৬ শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। এখন যে কোনো সময় ১৮ থেকে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতা সরকারের আছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন দেশে ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিলো। এখন দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।’

‘আসলে বিদ্যুৎ সুবিধা দিয়ে মানুষের অভ্যাসের পরিবর্তন হয়ে গেছে’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মানুষ এখন গ্রামেও এসি চালায়। মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডায় এখন এসি চলে। প্রতিদিন হাজার হাজার ইজিবাইক এবং ১৭ কোটি মানুষের দেশে সাড়ে ১৫ কোটি মোবাইল চার্জ করতে বিদ্যুৎ লাগে, এমন কি গ্রামেও রাইস কুকারে ভাত রান্না করে। অর্থাৎ বিদ্যুতের বহুমাত্রিক ব্যবহারে গত ১৪ বছরে মানুষের অভ্যাস পরিবর্তন হয়ে গেছে। মানুষকে এতো বিদ্যুৎ সুবিধা দিয়ে নিশ্চয়ই ভুল করা হয়নি, সবার খানিক ধৈর্য্যের প্রয়োজন। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, এখন বিশ্বমন্দা ও যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই অসুবিধাটা সাময়িক, ১৫-২০ দিনের মধ্যে দূর হবে।’

এর আগে ব্লু ইকোনমি’র সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন শীর্ষক সেমিনারে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের খন্ডকালীন শিক্ষক পরিবেশবিদ ড. হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমঝোতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে প্রায় দেশের সমআয়তনের সমুদ্রসীমা অধিকার করেছি। এই সমুদ্রসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পারলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার আরো ২ থেকে ৩ শতাংশ বাড়বে।

সেমিনারে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কে এম আজম চৌধুরী উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বিশেষ অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. কাউসার আহাম্মদ, জার্মান সহযোগিতা সংস্থা জিআইজেড’র প্রিন্সিপাল এডভাইজার ড. স্টেফান আলফ্রেড গ্রোয়েনেওল্ড এবং ঢাবি’র আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: জিল্লুর রহমান। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অভ ন্যাচার (আইইউসিএন) কান্ট্রি ডিরেক্টর মো: রকিবুল আমিন সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জোবায়ের আলম।

আন্তর্জাতিকভাবে ‘প্লানেট ওশান: টাইডস আর চেঞ্জিং (পরিবর্তিত তরঙ্গে গ্রহের মহাসমুদ্র)’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান গভারন্যান্স (আইসিওজি), জিআইজেড, ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক এন্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউট (নোয়ামি) ও জিআইজেড এর সহযোগিতায় দিবসটি উপলক্ষে সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এর আগে সকালে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি শোভাযাত্রা কার্জন হল প্রদক্ষিণ করে।সূত্র:বাসস।