বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা এখন জামালপুরেই এম এ রশীদ হাসপাতালে

বক্তব্য রাখেন এম এ রশীদ হাসপাতালের সিইও মো. আব্দুল জলিল খান। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম : ‘নির্ভুল চিকিৎসার আস্থায়, আমরা আছি আপনার পাশে’ এই অঙ্গীকার এম এ রশীদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাতের কাছে সাশ্রয়ী খরচে আন্তর্জাতিকমানের উন্নত চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যেই নজর কেড়েছে এই হাসপাতালটি। জামালপুর শহরের সরদারপাড়ায় দশতলা ভবনের এই হাসপাতালটি ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল। ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেড কর্তৃক পরিচালিত এবং ইউনাইটেড হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ নিয়মিত জামালপুরে এসে এই হাসপাতালে রোগী দেখছেন। জামালপুরের কৃতী সন্তান ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাসান মাহমুদ রাজা তাঁর পিতা প্রয়াত এম এ রশীদের নামে এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করেন।

১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে এম এ রশীদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জামালপুর প্রেসক্লাবের সদস্য বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। হাসপাতালের নবমতলায় অনুষ্ঠিত হয় এই মতবিনিময় সভা। মতবিনিময় সভার শুরুতেই এম এ রশীদ হাসপাতালে সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে এক ভিডিও তথ্যচিত্র দেখানো হয়। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং এখানকার চিকিৎসা কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দেন এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এম এ রশীদ হাসপাতালের যোগাযোগ ও ব্যবসায় উন্নয়ন বিভাগের প্রধান মো. নজরুল ইসলাম সাগর। সভায় বক্তব্য রাখেন এই হাসপাতালটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল জলিল খান, জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি চ্যানেল আইয়ের সাংবাদিক হাফিজ রায়হান সাদা ও সাধারণ সম্পাদক এটিএনবাংলা/এটিএননিউজ এর সাংবাদিক লুৎফর রহমান।

এম এ রশীদ হাসপাতাল সম্পর্কে সাংবাদিকদের ধারণা দিচ্ছেন যোগাযোগ ও ব্যবসায় উন্নয়ন বিভাগের প্রধান মো. নজরুল ইসলাম সাগর। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

এ সময় এই হাসপাতালটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল জলিল খান বলেন, একটি হাসপাতাল বা চিকিৎসা কেন্দ্রের মূল চালিকা শক্তি ডাক্তার। আমাদের এখানে জরুরি বিভাগ সব সময় চালু থাকে এবং জরুরি বিভাগে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে পরিচালনা করা হয়। যা এই জেলার অন্য কোথাও নেই। এখানে গুণগত মানের দিক লক্ষ্য রেখেই বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। গত ১৪ মাসে আমরা এখানে প্রায় ২৯ হাজার রোগীকে সেবা দিয়েছি। এখনো কিছুই হয়নি। আমরা সবেমাত্র শুরু করেছি। এটা আমাদের লম্বা জার্নি। জেলাবাসীর আরো আস্থা অর্জনে হাতের কাছে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য আমরা নানামুখী উদ্যোগকে সঠিকভাবে বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি জানান, শিগগির এই হাসপাতালে চালু হতে যাচ্ছে আইসিইউ, সিসিইউ, এইচডিইউ ও ক্যাথ ল্যাব।

সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে মেডিসিন, শিশু ও নবজাতক, নেফ্রোলোজি (কিডনি), গ্যাস্ট্রোএন্টারোলোজি, রেসপিরেটরি মেডিসিন, অর্থপেডিক্স, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি, সার্জারি, নিউরোলোজি, কার্ডিওলোজি, অনকোলোজি, চর্ম ও যৌন, ইএনটি, এনেস্থেসিওলোজি বিভাগে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা রোগী দেখেন। সকল বিভাগেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা রোগী দেখেন। এই হাসপাতালের ডাক্তাররা একজন রোগী দেখতে অন্তত ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় নিয়ে থাকেন। অন্যকোনো হাসপাতালে এই সময়ের মধ্যে একাধিক রোগী দেখা হয়। এই পার্থক্য থেকেই বোঝা যায় এম এ রশীদ হাসপাতালে খুবই যত্নসহকারে রোগী দেখা হয় এবং রোগ নির্ণয়ের আধুনিক সব রকমের ব্যবস্থাপনা রয়েছে। জামালপুর শহরের বেসরকারি পর্যায়ে হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলোর মধ্যে একমাত্র এই এম এ রশীদ হাসপাতালেই রয়েছে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় অভিজ্ঞ ডাক্তার ও আন্তর্জাতিকমানের আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে তাৎক্ষণিক চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সবরকমের সুযোগ-সুবিধা। এই হাসপাতাল দিবা-রাত্রি ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা হয়। ২৪ ঘণ্টা রোগীর চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই হাসপাতালে জরুরি বিভাগ ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। জরুরি বিভাগে পাওয়া যায় সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকেন। জরুরি বিভাগের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধও মজুদ থাকে সব সময়।

এম এ রশীদ হাসপাতালের উন্নত সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধ ডায়ালাইসিস বিভাগ। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

এই হাসপাতালে নবজাতক পরিচর্যা ইউনিট, চারটি মড্যুলার অপারেশনস থিয়েটার ও একটি ইমারজেন্সি মাইনর অপারেশন থিয়েটার, নিজস্ব এনেস্থেসিওলোজিস্ট, ২৪ ঘণ্টা ল্যাবরেটরির সার্ভিসেস, সর্বাধুনিক ১২৮ স্লাইস সিটি স্ক্যান, সর্বাধুনিক ১.৫ টেসলা এমআরআই মেশিন, ২৪ ঘণ্টা এক্স-রে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাম, ইকো, সর্বাধুনিক মেমোগ্রাফি ও ২৪ ঘণ্টা ফার্মেসি সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া অত্যাধুনিক ডায়াগনোস্টিক ল্যাব, পূর্ণাঙ্গ রেডিওলোজি সার্ভিস, ফিজিওথেরাপি, কেমো থেরাপি, ডায়েটারি সার্ভিস ও সার্বক্ষণিক কিডনি বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে ডায়ালাইসিস, ব্লাডব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক মানের সমস্ত পরিষেবা রয়েছে এই হাসপাতালে। হাসপাতালের অভিজ্ঞ ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস দক্ষ নার্সিং সার্ভিসেস, স্কিল্ড অপারেশনস টিম, কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস, পেশেন্ট কেয়ার সার্ভিস, ফুড এন্ড বেভারেজ এবং হাউস কিপিং সার্ভিস নিয়ে গঠিত হয়েছে স্বাস্থ্য সেবাদানকারী একটি পেশাদার টিম। হাসপাতালের নিজস্ব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের আন্তরিক চিকিৎসা পরিষেবা ও আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখন জামালপুরবাসীর হাতের নাগালেই অথচ খরচ অনেক কম। এম এ রশিদ হাসপাতালে সর্বস্তরের জনবল রোগীদের সর্বদা বিশ্বমানের যত্ন প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। হাসপাতালের নিবেদিত প্রাণ ডাক্তার, নার্স, পেশেন্ট কেয়ার এটেনডেন্ট এবং সেবা দলের সকলেই হাসপাতালে আগত রোগীদের প্রতি সবসময়ই সহযোগিতামূলক মনোভাবাপন্ন এবং সহানুভূতিশীল সেবা প্রদানে যত্মশীল।

প্রাণঘাতী বিভিন্ন জটিল রোগ প্রতিরোধেও এই হাসপাতালে রয়েছে হেলথ চেকআপ ইউনিট ও বিশেষায়িত সেবা এবং প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম। অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞের চিকিৎসাসেবা আর আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীরদের আস্থা এখন এম এ রশিদ হাসপাতালের প্রতি। দরিদ্র রোগীদের সেবা দিতেও রয়েছে নানা উদ্যোগ। এই হাসপাতালে স্থানীয় শিক্ষিত বেকারযুবকদের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আগে এই হাসপাতালের যোগাযোগ ও ব্যবসায় উন্নয়ন বিভাগের প্রধান মো. নজরুল ইসলাম সাগর ও একই বিভাগের এক্সিকিউটিভ মো. নওয়াজেশ রহমান হিমেল সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে এম এ রশিদ হাসপাতালের পুরো ভবনের স্থাপিত বিভিন্ন বিভাগ ও ল্যাব দেখান।