মানসম্মত শিক্ষা উন্নয়নে জামালপুর উন্নয়ন সংঘের শিখন বিনিময় সফর

মধুপুর সরকারি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নয়ন সংঘের শিখন বিনিময় সফরে অংশগ্রহণকারী দল। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের উন্নয়ন সংঘের ‘মর্যাদা ও স্থায়িত্বশীলতার সাথে আর্থ-সামাজিক ক্ষমতায়তন (সিডস)’ কর্মসূচির আওতায় প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম আরও গতিশীল ও মানসম্মত করতে এবং শিক্ষকদের পাঠদান পরিচালনায় আরও দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ৩০ অক্টোবর টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিখন বিনিময় সফর করা হয়।

শিখন বিনিময় সফরের নেতৃত্ব দেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক ও সিডস কর্মসূচির ফোকাল পারসন জাহাঙ্গীর সেলিম।

সফর সঙ্গী হিসেবে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন উন্নয়ন সংঘের সিডস কর্মসূচির শিক্ষা কর্মকর্তা সায়েদুল ইসলাম, উপজেলা সমন্বয়কারী রবিউল এমরান, হামিদুল হক, শওকত উসমান, মাঠ সহায়ক রেহেনা আক্তার, নুরুল ইসলাম, হুমায়ুন কবীর, প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নুরেজা আক্তার খুকি, শারমিন আক্তার, রোজিনা আক্তার।

এদিন সকালে মধুপুর শহরে অবস্থিত প্রাচীন বিদ্যালয় মধুপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নয়ন সংঘের সফরকারী দল প্রবেশ করলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাদের সাদর সম্ভাষণ জানান। পরে তিন ঘণ্টাব্যাপী প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষক আফরোজা বেগমের দক্ষতার সাথে পাঠদান পরিচালনা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন উন্নয়ন সংঘের সফরকারী দল।

মধুপুর সরকারি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নয়ন সংঘের শিখন বিনিময় সফরে অংশগ্রহণকারী দল। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

শ্রেণি কক্ষটি শিশুবান্ধব পরিবেশ করে গড়ে তোলা হয়েছে। শিক্ষা সহায়ক উপকরণের পাশাপাশি অঙ্ক, বাংলা, ইংরেজি অক্ষর, বাক্য, মনীষীদের শিক্ষামূলক বাণী, ছবিসহ থরে থরে সাজানো হয়েছে দারুণসব উপকরণে। জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে শুরু হওয়া ক্লাশটি নেয়া হয় পাঠ পরিকল্পনা অনুযায়ী। শিশু মনের উপযোগী পাঠ পদ্ধতির পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম হিসেবে শরীর চর্চা, আবৃত্তি ও গান পরিবেশনা, খেলা এবং শিশুদের সুশৃঙ্খল পরিবেশ ছিলো মনে রাখার মতো। বিশেষভাবে সক্ষম একজন শিশুকে দারুণ যত্নের সাথে পাঠদানে সফরকারীদের মুগ্ধ করেছে।

শিক্ষকের উৎসাহব্যঞ্জক আচরণ শিশুদের করছে পাঠদানে মনোযোগী। প্রতিটি শিশুর সাথে অভিভাবকদের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি তাদের মনোকষ্ট দূরীকরণে ভূমিকা রাখছে। হাতের লেখা, দেখে দেখে পড়া এবং মুখস্থ করার অভিনব কৌশল ভালো লেগেছে। ছোটখাটো দুয়েকটা ভুল ছাড়া ক্লাশটি ছিলো প্রাণবন্ত।

উন্নয়ন সংঘ সূত্র জানায়, সংস্থার প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গ্যাপগুলো এ সফর থেকে দূর করা যাবে। এছাড়া সরকারি বিদ্যালয় বিশেষ করে মধুপুরের সুনামখ্যাত মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাশ পরিচালনা কৌশলগুলো কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন সংঘের পরিচালিত বিদ্যালয়ের কার্যক্রম আরও উন্নত ও মানসম্মত করা সম্ভব হবে।

এর আগে দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জের সিডস দল ইসলামপুরে সংস্থার ভাসমান বিদ্যালয়ের শিক্ষাদান কার্যক্রম সরেজমিনে দেখতে সফর করেন। মোট ২৭ জন শিক্ষক, এফএফগণ, উপজেলা সমন্বয়কারীগণ শিখন বিনিময় সফরে অংশ নেন।

জানা যায়, উন্নয়ন সংঘ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার উপযোগী করে গড়ে তুলতে কর্মএলাকার ৫ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের এ শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। সরকারি শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে।

সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ কর্মএলাকার ২ হাজার ৫০০ প্রান্তিক পরিবারে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাত্রা আশাব্যঞ্জক পর্যায়ে উন্নতি করার লক্ষ্যে নরওয়েভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা স্ট্রমি ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় উন্নয়ন সংঘ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সিডস প্রকল্প জামালপুর জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলায় বহুমাত্রিক কার্যক্রম চলছে। শিক্ষা, জীবীকায়ন, যুবক, যুবতীদের আত্মকর্মসংস্থান, কিশোর, কিশোরীদের ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের আওতায় কর্মএলাকার আড়াই হাজার পরিবার সরাসরি উপকার ভোগ করছে।