জামালপুরে উন্নয়ন সংঘের ৪২ বছর উপলক্ষে সহযাত্রী সম্মিলন অনুষ্ঠিত

জামালপুরে উন্নয়ন সংঘের সহযাত্রী সম্মিলনে ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান ও মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: উৎসব মুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে ‘সংগ্রামে, জাগরণে, প্রত্যয়ে’ এই শ্লোগান সামনে রেখে উন্নয়ন সংঘের ৪২ বছর উদযাপন উপলক্ষে ১৫ মার্চ সহযাত্রী সম্মিলন ২০২২ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন।

জামালপুরে উন্নয়ন সংঘের সহযাত্রী সম্মিলনে স্টল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান ও মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

উন্নয়ন সংঘের বিনোদন পার্ক চাইল্ড সিটি প্রাঙ্গণে সহযাত্রী সম্মিলনে সভাপতিত্ব করেন সংস্থার কার্যনির্বাহী পরিষদের সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন। আলোচনা সভায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ল্ড ভিশনের এরিয়া প্রোগ্রামের সমন্বয়কারী রাজু উইলিয়াম রোজারিও, উন্নয়ন সংঘের সাবেক সভাপতি ফজলুল করিম, বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাবেরা হুদা, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলে এলাহী মাকাম, ব্র্যাক জেলা সমন্বয়কারী মনির হোসেন খান, টিএমএসএস এর উপনির্বাহী পরিচালক সোহরাব হোসেন খান, উন্নয়ন সংঘের সাধারণ পরিষদের সদস্য শামীমা খান, কার্যনির্বাহী কমিটির সহসভাপতি আইনজীবী শামীম আরা, কোষাধ্যক্ষ সাজেদা পারভীন, হিজড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মী মেহেদী হাসান অন্তর, রিকল-২১ প্রকল্পের সিবিও নেতা নাছিমা আক্তার, এনএসভিসি প্রকল্পের অংশীজন আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

জামালপুরে উন্নয়ন সংঘের সহযাত্রী সম্মিলনে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান ।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উন্নয়ন সংঘের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল আলম মোল্লা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম ও সহকারী পরিচালক কর্মসূচি মুর্শেদ ইকবাল। সভা শেষে উন্নয়ন সংঘের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৫০ জনকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

জামালপুরে উন্নয়ন সংঘের সহযাত্রী সম্মিলনে নৃত্য পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সভার প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান উন্নয়ন সংঘের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, উন্নয়ন সংঘ জামালপুরের উন্নয়নে সরকারের উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আমাদের সরকারি কাজের প্রয়োজনে ডাকলে উন্নয়ন সংঘ দ্রুত সাড়া দিয়ে থাকে। প্রতিটি প্রকল্পের স্টল দেখে এবং ধারণাপত্র থেকে উন্নয়ন সংঘ সম্পর্কে আমার ধারণা আরও স্পষ্ট হয়েছে। উন্নয়ন সংঘের কার্যক্রম সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ুক তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক তার স্মৃতি থেকে উন্নয়ন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সামছুল হুদাকে স্মরণ বলেন, হুদা সাহেবে একজন প্রাণবন্ত এবং গতিশীল মানুষ ছিলেন। অনেক কষ্ট আর ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে উন্নয়ন সংঘ গড়ে তুলেছেন। তার রেখে যাওয়া আজেকের কর্মীদের কারণে সত্যিই উন্নয়ন সংঘ আজ জামালপুরে একটি মহিরুহ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। তিনি উন্নয়ন সংঘের আরও সমৃদ্ধি কামনা করেন।

দর্শক সারিতে অতিথিসহ উন্নয়ন সংঘ ও অন্যান্য সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধান অতিথি ও উদ্বোধককে উন্নয়ন সংঘের কর্মীরা ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এরপর ফিতা কেটে সহযাত্রী সম্মিলনের উদ্বোধন করা হয়। পরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা ও উন্নয়ন সংঘের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর মেলায় স্থাপিত প্রতিটি স্টল অতিথিরা পরিদর্শন করেন। সিডস, জামালপুর এপি, তথ্য, প্রকাশনা ও মানবাধিকার, রিকল-২১, বিংগস, এসএমপি, স্কুল ফিডিং, চাইল্ড সিটি, ডিটিআরসি. ইটসেপ, এনএসভিসি, হিজড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পসহ ১২টি স্টল নিয়ে মেলা সাজানো হয়। মেলার প্রতিটি স্টল বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হয়। নানা রঙের বেলুন আর নানা উপকরণ দিয়ে গোটা অনুষ্ঠানস্থল হয়ে উঠে সাংস্কৃতিক আবহে উদ্ভাসিত।

সর্বশেষে জাকিউল ইসলাম টিপুর নেতৃত্বে উন্নয়ন সংঘের নিজস্ব শিল্পীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সংঘের জামালপুর এরিয়া প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপক মিনারা পারভীন। র‌্যাফেল ড্রয়ের মাধামে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।