শেরপুরে পৃথক ঘটনায় দু’জনের লাশ উদ্ধার

লাশ লাশসুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরে পৃথক ঘটনায় দুইজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৪ আগস্ট রাতে ঝিনাইগাতী থেকে এক কিশোর ও শ্রীবরদী উপজেলা থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়।

সূত্র জানায়, ঝিনাইগাতীতে কবুতর চুরির অপবাদে অভিমান করে সজিব নামে এক কিশোর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। ৪ আগস্ট রাতে উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের মধ্য ডেফলাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সজিব ওই গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে ও শালচুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।

নিহতের স্বজনরা জানায়, ৪ আগস্ট দুপুরে একই গ্রামের বাসিন্দা চাঁন মিয়ার ছেলে ছামু, জয়নাল মিয়ার ছেলে হেদা ও নিহত সজিবসহ ৩ বন্ধু মিলে একই গ্রামের কালু মিয়ার ছেলে ইস্রাফিলের বাড়ি থেকে ৩টি কবুতর চুরি করে ঝিনাইগাতী বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যায়। ইস্রাফিল ও তার স্ত্রী বাড়িতে না থাকায় ইস্রাফিলের বোন লাইলী কবুতর চুরির বিষয় নিয়ে ওই কিশোরদের অভিভাবকের কাছে জানায়। পরে কিশোর ছামুর মা মোশেদা বেগম নিজেই ঝিনাইগাতী বাজারে গিয়ে সজিব, ছামু ও হেদাকে চুরিকৃত ৩টি কবুরতসহ তাদেরকে বাজার থেকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসার সময় ছামু ভয়ে রাস্তা থেকে পালিয়ে যায়। বাকি ২ কিশোরকে নিয়ে ৩টি কবুতর ইস্রাফিলের বোনকে বুঝিয়ে দেয়। এ সময় লাইলী কিশোরদের চোর অপবাদ দিয়ে গালমন্দ করে।

এমতাবস্থায় কিশোর সজিব বাড়িতে ফিরলে তার মা নাজমা বেগমও ছেলেকে বকাঝকা করে। সবকিছু মিলে মর্মাহত হয় সজিব। পরে সে ওই রাতে সকলের অগোচরে বসত ঘরের ধর্ণাতে দড়িতে ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়ে। এ সময় তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইগাতী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সজিবকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ হাসপাতাল থেকে থানায় নিয়ে আসে এবং সুরতহাল করে। ওই রাতেই ওসি মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান, ওসি তদন্ত সারোয়ার, এসআই কাজলসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে আলামত সংগ্রহ করে।

অন্যদিকে শ্রীবরদীতে স্ত্রীর সাথে অভিমান করে রফিক মিয়া নামে এক যুবক গাছের ডালে রশি বেঁধে আত্মহত্যা করে। ৪ আগস্ট রাতে পৌরসভার জালকাটা এলাকায় তার শ্বশুর বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। রফিক উপজেলার কুরুয়া রহমতপুর গ্রামের লস্কর আলীর ছেলে।

নিহত রফিকের স্ত্রী সোনিয়া ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৮ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। সংসারে প্রীতি নামে ৫ বছর বয়সী এক সন্তান রয়েছে। রফিক আগে সিএনজি চালিয়ে সংসার চালাতো। তবে জুয়া খেলে নিঃস্ব হয়। কিছুদিন যাবত মাছ ধরে কোনো মতে সংসার চালিয়ে আসছিল। গত ঈদে সোনিয়া বাপের বাড়ি বেড়াতে আসে।

৪ আগস্ট রাতে সবার অজান্তে রহস্যজনক কারণে শ্বশুর বাড়ির পাশে খালের পাড়ে একটি গাছের ডালের সাথে গলায় রশি বেঁধে আত্মহত্যা করে রফিক।

পরে বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে আসলে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।