আলুবীজ সংগ্রহ মূল্য বাড়ানোর দাবি বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ চাষীদের

আলুবীজের সংগ্রহমূল্য বাড়ানোর দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন চুক্তিবদ্ধ আলুবীজ চাষী শামছুল হক আকন্দ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরে বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ আলুবীজ চাষীদের উৎপাদিত আলুবীজের সংগ্রহ মূল্য গত মৌসুমের চাইতে এ বছর কমিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছে জামালপুর জোনের চুক্তিবদ্ধ আলুবীজ চাষীরা। ১১ এপ্রিল সকালে জামালপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আলুবীজের সংগ্রহ মূল্য বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা। এই দাবি জানিয়ে তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে চুক্তিবদ্ধ আলুবীজ চাষী শামছুল হক আকন্দ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তনি বলেন, বিএডিসি জামালপুর হিমাগার কর্তৃপক্ষ ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে চুক্তিবদ্ধ আলুবীজ চাষীদের কাছ থেকে প্রতি কেজি এ-গ্রেড আলুবীজ ২০ টাকা এবং বি-গ্রেড আলুবীজ ১৯ টাকা দরে ক্রয় করে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এ-গ্রেড প্রতি কেজি ২৩ টাকা এবং বি-গ্রেড প্রতি কেজি ২২ টাকা দরে ক্রয় করে। আর চলতি অর্থ বছরে প্রজ্ঞাপন জারি করে সংগ্রহমূল্য অনেক কমিয়ে দিয়েছে। এবার এ-গ্রেড ১৯ টাকা এবং বি-গ্রেড প্রতি কেজি আলুবীজের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ টাকা করে।

চুক্তিবদ্ধ চাষীদের অভিযোগ, বিএডিসির চুক্তিবদ্ধচাষীদের মাধ্যমে ১৯৮৩ সাল থেকে আলুবীজ চাষ ও সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিবছর সংগ্রহমূল্য এক টাকা হলেও বাড়ানো হয়। কিন্তু এ বছর গত বছরের চাইতে প্রতি কেজিতে এ-গ্রেডে কমিয়েছে চার টাকা এবং বি-গ্রেডে কমিয়েছে ছয় টাকা। জামালপুরে চলতি মৌসুমের শুরুতে বিএডিসির দেওয়া ভিত্তি আলুবীজ ও প্রত্যায়িত আলুবীজের মান খারাপ থাকায় শতকরা ৩০ ভাগ আলুবীজ গাছ মরে যাওয়ার কারণে এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার চাইতে অনেক কম আলুবীজ উৎপাদিত হয়েছে। একদিকে উৎপাদন কম হওয়ায় ব্যাংক ঋণ পরিশোধসহ উৎপাদন খরচই উঠবে না আলুবীজ চাষীদের। অন্যদিকে এ বছর অসামঞ্জস্য মূল্য নির্ধারণ করায় আলুবীজ চাষীদের মাথায় হাত পড়েছে। প্রতি একরে অন্ততঃপক্ষে ৩০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন জামালপুর জোনের ২০টি ব্লকের চার শতাধিক আলুবীজ চাষীরা। এ বছর আলুবীজের সংগ্রহ মূল্য প্রতি কেজি সাড়ে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীসহ বিএডিসির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি জোর দাবি জানান চুক্তিবদ্ধ আলুবীজ চাষীরা।

আলুবীজ চাষীদের অভিযোগ, এই অসামঞ্জস্য মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। চলতি মৌসুমের শুরুতে আলুবীজ আবাদের জন্য দুটি বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে আলুবীজ সরবরাহ করার কারণে এবার আলুবীজের মান ভালো হয়নি। বিএডিসির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একটি সিন্ডিকেট বেসরকারি সংস্থাগুলোর সাথে যোগসাজশ করে বিএডিসির সুনাম নষ্ট করে বিএডিসির আলুবীজ শাখাকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে অল্পকিছু দিনের মধ্যেই বিএডিসির আলুবীজ শাখা ধ্বংস হয়ে বেসরকারি সংস্থাগুলোর হাতে চলে যাবে। এতে প্রতি বছর আলুর উৎপাদন কমে গিয়ে দেশের কৃষি অর্থনীতিতে খারাপ প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে।