সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা আমানুল্লাহ কবিরের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার রেখিরপাড়ায় পরিবারের স্বজন ও জামালপুর প্রেসক্লাবের প্রতিনিধি সাংবাদিকরা সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবিরের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক, প্রথিতযশা সাংবাদিক, লেখক ও মুক্তিযোদ্ধা আমানুল্লাহ কবিরের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেছেন তাঁর পরিবারের স্বজনরা। ১৫ জানুয়ারি দুপুরে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ফুলকোচা ইউনিয়নের রেখিরপাড়া গ্রামে তার নিজ বাড়িতে কবর জিয়ারত, ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

প্রয়াত এই সাংবাদিকের গ্রামের বাড়ি রেখিরপাড়া জামে মসজিদে জুমার নাম শেষে সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবিরের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। পরে মসজিদ সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে প্রয়াত সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবিরের পরিবারের স্বজন ও জামালপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

এ সময় মেলান্দহ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান, ফুলকোচা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান সরকার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মোখলেছুর রহমান মানিক, জামালপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সাংবাদিক দুলাল হোসাইন, কালের কণ্ঠের সাংবাদিক মোস্তফা মনজু, মানবকণ্ঠের সাংবাদিক কাফি পারভেজ ও সাংবাদিক সাইমুম সাব্বির শোভন, আমানুল্লাহ কবিরের ছোটভাই হারুন অর রশিদ, দুই ছেলে শাথিল কবীর, ফারহান কবীর ও মেয়ে সারা কবীরসহ পরিবারের অন্যান্য স্বজন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে আমানুল্লাহ কবিরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

উল্লেখ্য, সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবির ১৯৪৭ সালের ২৪ জানুয়ারি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ফুলকোচা ইউনিয়নের রেখিরপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে দৈনিক পয়গাম পত্রিকা দিয়ে সাংবাদিকতা শুরু করেন। ১৯৭১ সালে ইংরেজি সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত হন। দ্য পিপল-এ কাজ করার সময় শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হামলা চালিয়ে ওই পত্রিকার অফিসটি গুঁড়িয়ে দেয়। অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। পরে তিনি ঢাকা নগরী ছেড়ে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার রেখিরপাড়ায় ফিরে যান এবং সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।

স্বাধীনতার পর দ্য পিপল পুনরায় আত্মপ্রকাশ করলে তিনি আবার এ পত্রিকায় যোগ দিয়ে স্বাধীন বাংলায় সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টে নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন ছাড়াও দেশের অনেক সংবাদপত্রে নিষ্ঠার সাথে সাংবাদিকতা ও সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেছেন। সাংবাদিকতা পেশার শত ব্যস্ততার মাঝেও তিনি কবিতা, গল্প ও বেশ কিছু প্রবন্ধ লিখেছেন। তাঁর লেখা ১০টি বইও দেশে বিদেশে বেশ সমাদৃত। ডায়াবেটিক ও কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ৭২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন প্রথিতযশা এই সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবির।