দেওয়ানগঞ্জে যমুনায় চলছে বালি তোলার মহোৎসব

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ী পশ্চিমপাড়া যমুনা নদী থেকে বালি তুলে বোঝাই করা হচ্ছে ট্রলিতে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

বিল্লাল হোসেন মন্ডল, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চর আমখাওয়া ইউনিয়নের সানন্দবাড়ী পশ্চিমপাড়া যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি তোলার মহোৎসব চলছে। এতে হতাশা ও নদী ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে চারটি গ্রামের মানুষ। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ২০-৩০টি টলি গাড়ি দিয়ে নদী থেকে বালি তুলছে একটি দুষ্টচক্র।

৯ জানুয়ারি সরেজমিনে দেখা গেছে, যমুনা নদী থেকে ট্রলিতে বালি তুলে পরিবহনের প্রতিযোগিতা চলছে। বালি ব্যবসায়ী একটি দুষ্টচক্র দীর্ঘদিন যাবত নদী থেকে প্রতিদিন বালি তুলছে। এসব বালি বিক্রি করছে বিভিন্ন এলাকায়।

চর আমখাওয়া ইউনিয়নের পাঠাধোয়াপাড়া, লম্বাপাড়া এলাকার একাধিক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অবৈধভাবে বালি তুলে আসছে বালিদস্যু মহলটি। তারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করছে। বালু তোলার ফলে পাটাধোয়াপাড়া, সানন্দবাড়ী পশ্চিমপাড়া মণ্ডলপাড়া, টুপকারচর, মৌলভীরচর চারটি গ্রামসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা থাকায় হতাশায় রয়েছে এলাকাবাসী। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই শত শত বাড়ি-ঘর ও ফসলী জমি যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিন জানান, নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করেছিলো এতেও কোন কাজ হয়নি। বন্যার পানিতে বেড়িবাঁধ ধসে গিয়ে শতাধিক পরিবারের বসত বাড়ি ও ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আবার ওইখান থেকেই অবাধে বালি তোলা হচ্ছে। বিষয়টি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আজিজুর রহমান জানান, প্রতি বছর যমুনা ভাঙনের কারণে নদীতীরবর্তী পাটাধোয়াপাড়া, সানন্দবাড়ী পশ্চিমপাড়া মণ্ডলপাড়া, টুপকারচর, মৌলভীরচর গ্রামের পরিবারের বসত বাড়ি ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন থেকে রক্ষার জন্য পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ এমপি মোল্লারচর বেড়িবাঁধ থেকে মৌলভীরচর ভাটিপাড়া পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণের জন্য পানি উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার দিয়েছেন। যেভাবে বালি তোলা হচ্ছে আগামী বর্ষা মৌসুমে চারটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

চর আমখাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান আকন্দ জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। জমির মালিকরা তাদের নিজ জমি থেকে বালি বিক্রি করছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম আব্দুলাহ বিন রশিদ জানান, বালি তোলার বিষয়টি আমার জানা নেই। যমুনা নদী থেকে যদি বালি তোলা হয়ে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।