বাল্যবিয়ে নিবন্ধন করে বিপাকে দুই কাজী!

সহকারী কাজী আব্দুল বাসেতের ঝিনাইগাতী বাজারের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় বাল্যবিয়ে নিবন্ধন করার অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলম (৫০) নামে এক কাজীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও তার সহকারী কাজী আব্দুল বাসেতের (৪৫) ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করার আদেশ দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ৮ অক্টোবর রাতে ইউএনও ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম রুবেল মাহমুদ এ আদেশ দেন। পরে জরিমানার টাকা আদায় করার পর ৯ অক্টোবর সকাল থেকে সহকারী কাজীর প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

অর্থদণ্ডপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি উপজেলার হাতিবান্ধা ইউপির ঘাগড়া প্রধানপাড়া গ্রামে আর সহকারী কাজী বাসেতের বাড়ি পশ্চিম বেলতৈল গ্রামে।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, ৭ অক্টোবর রাতে জেলা সদর উপজেলার দমদমা কালিগঞ্জ এলাকার মুরাদ নামের এক যুবকের সাথে ঝিনাইগাতীর পশ্চিম হাতিবান্ধা গ্রামের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর (১৪) বিয়ে দেওয়া হয়। ওই বিয়ের নিবন্ধন করান কাজী জাহাঙ্গীর আলম। এতে সহযোগিতা করেন সহকারী কাজী আব্দুল বাসেত। বাল্যবিয়ের সংবাদ পেয়ে ওই রাতেই ইউএনও রুবেল মাহমুদ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়নাল আবেদীন বিয়ে বন্ধ করতে ছাত্রীর বাড়িতে যান। কিন্তু প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে বরপক্ষের লোকজন ও কাজী দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে ইউএনও রুবেল মাহমুদ ছাত্রীটি প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত শ্বশুর বাড়িতে পাঠাবেন না মর্মে অভিভাবকের কাছ থেকে মুচলেকা নেন।

পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ইউএনও রুবেল মাহমুদ কাজী জাহাঙ্গীর আলম ও সহকারী কাজী আব্দুল বাসেতকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি এলাকায় মাইকিং করে উভয় কাজীকে আদালতের সামনে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়। পরে কাজী জাহাঙ্গীর উপস্থিত হলেও বাসেত পলাতক থাকেন।

৮ অক্টোবর রাতে নির্বাহী হাকিম রুবেল মাহমুদ ২০১৭ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১১ ধারায় জাহাঙ্গীর আলমকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। একই সাথে সহকারী কাজী আব্দুল বাসেত পলাতক থাকায় তার ঝিনাইগাতী বাজারের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করার নির্দেশ দেন।

দণ্ড প্রদানের সত্যতা নিশ্চিত করে ইউএনও রুবেল মাহমুদ বলেন, জাহাঙ্গীর আলম ও বাসেত পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নে বাল্য বিয়ে নিবন্ধন কার্যক্রম করে আসছিলেন। এর মাধ্যমে তারা সরকারি নির্দেশ ও আইন অমান্য করেছেন। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন : শেরপুরে ট্রাকচাপায় শিশুর মৃত্যু