জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম
নিজ কর্মস্থলের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা পৃথক তিনটি মামলায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মাদারগঞ্জ শাখার তিনজন কর্মকর্তা ও নরুন্দি বাজার শাখার একজন কমকর্তাসহ সাতজনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানার আদেশ দিয়েছেন জামালপুরের স্পেশাল জজ মোহাম্মদ জহিরুল কবির। ১৫ সেপ্টেম্বর তাঁর আদালতে এ রায় দেন তিনি।
দুদকের দায়ের করা পৃথক তিনটি মামলায় পৃথক ধারায় কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন- কৃষি ব্যাংক মাদারগঞ্জ শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক আলী আহাম্মদ, দ্বিতীয় কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান, সাবেক ব্যবস্থাপক আজিজুল হক ও একই ব্যাংকের নরুন্দি বাজার শাখার সাবেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, প্রতারণাকারী পলাতক আসামি আশরাফ হোসেন, এ কে এম শফিকুল ইসলাম ও মো. সোলায়মান।
তাদের মধ্যে আসামি আলী আহাম্মদ ও মো. হাবিবুর রহমানকে তিনটি মামলায় প্রত্যেককে মোট ২১ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ২১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩০ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড, আজিজুল হককে দুটি মামলায় মোট ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১৪ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২০ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, মো. নজরুল ইসলামকে একটি মামলায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও সাত হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১০ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। দণ্ডবিধি ৪০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় তাদেরকে এ সাজা দেওয়া হয়।
এছাড়া পলাতক আসামি মো. আশরাফ হোসেন ও এ কে এম শফিকুল ইসলামকে দুটি মামলায় প্রত্যেকে মোট আট বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং পলাতক আসামি মো. সোলায়মানকে একটি মামলায় চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় তাদেরকে এ সাজা দেওয়া হয়।
কৃষি ব্যাংকের দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তিনজন প্রতারকের যোগসাজসে গ্রাহকের হিসাবে টাকা জমা না করেই জমার স্লিপগুলোর জাল পোস্টিং দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠায় দুদকের টাঙ্গাইল সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সৈয়দ আহম্মদ বাদী হয়ে ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর মাদারগঞ্জ থানায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছিলেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে জামালপুরের স্পেশাল জজ মোহাম্মদ জহিরুল কবির ১৫ সেপ্টেম্বর মামলা তিনটির রায় দেন। তিনটি পৃথক মামলার রায়ে প্রত্যেক আসামির সাজা পর্যায়ক্রমে কার্যকর হবে বলে আদেশে উল্লেখ করেছেন বিচারক।
তিনটি মামলায় দুদকের আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন আইনজীবী মো. লুৎফর রহমান রতন এবং আসামি পক্ষ সমর্থন করেন আইনজীবী মো. আব্দুল্লাহ, আমান উল্লাহ আকাশ ও মুহাম্মদ বাকি বিল্লাহসহ আরো কয়েকজন আইনজীবী।