করোনাভাইরাসে আক্রান্তের হার কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ১৬২তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্তের হার কমেছে এবং সুস্থতার হার বেড়েছে।

গত ২৪ ঘন্টায় ১০ হাজার ১৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ২৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৬২০ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১২ হাজার ৮৯১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৬৪৪ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২০ দশমিক ৫১ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৩১ শতাংশ কম।

দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

১৬ আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক চিকিৎসক নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ৩২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ২ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৪ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৬৫৭ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। ৫ আগস্ট থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৩১৫ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৩০৩ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ১২ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫০ জন।

আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৫৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ০৬ শতাংশ বেশি।

বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৯ হাজার ৬৩৬ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৮০০ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৩ হাজার ১৬৪টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৮৭টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১০ হাজার ১৮ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৮৯১ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ২ হাজার ৮৭৩টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।

২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ এবং ৭ জন নারী। এখন পর্যন্ত পুরুষ ২ হাজার ৮৯০ জন; ৭৯ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং ৭৬৭ জন নারী মারা গেছেন; ২০ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে ৩১ জন এবং বাড়িতে একজন মারা গেছেন।

বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ষাটোর্ধ্ব১৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। বয়সের হিসেবে এখন পর্যন্ত মারা যাওয়াদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছে ১৯ জন; যা দশমিক ৫২ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩৪ জন; যা দশমিক ৯৩ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৯১ জন; যা ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২৩১ জন; যা ৬ দশমিক ৩২ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪৯৬ জন; যা ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১ হাজার ৩১ জন; যা ২৮ দশমিক ২২ শতাংশ এবং ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে রয়েছেন ১ হাজার ৭৫৪ জন; যা ৪৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৪, চট্টগ্রামে ৩, রাজশাহীতে ৬, খুলনায় ২, বরিশালে ৩, সিলেটে ২ ও রংপুরে ২ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ১ হাজার ৭৪৮ জন; যা ৪৭ দশমিক ৮০ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৩৭ জন; যা ২২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ২৪০ জন; যা ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ২৮৯ জন; যা ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৪১ জন; যা ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ১৭৪ জন; যা ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ১৪৮ জন; যা ৪ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৮০ জন; যা ২ দশমিক ১৯ শতাংশ।

গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থতার সংখ্যা, ঢাকা বিভাগে ৫৯২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৫ জন, রংপুর বিভাগে ৪৪ জন, খুলনা বিভাগে ১৩৭ জন, বরিশাল বিভাগে ২৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০৮ জন এবং সিলেট বিভাগে ২৭ জন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৫৭৯ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২০ হাজার ৩৩৯ জন। আইসোলেশন থেকে ২৪ ঘন্টায় ৪৪৯ জন এবং এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার ৭৩৩ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৬২ হাজার ৭২ জনকে।

প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে এক হাজার ৫২৬ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘন্টায় এক হাজার ৬১১ জন এবং এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৫ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৪৪১ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫২ হাজার ৭৬৬ জন।

ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ২৫৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ৭৮১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২১৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৮৭টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ২৫০ জন ও শয্যা খালি আছে ৫৩২টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২০ জন ও শয্যা খালি আছে ১৯টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪৩৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৭৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৫৫৭টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ১৯৯টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১১৩টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৫ হাজার ২৫৫টি, রোগী ভর্তি আছে ৪ হাজার ৩৮৫ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৮৭০টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৩টি, রোগী ভর্তি আছে ৩২৪ জন এবং খালি আছে ২১৯টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৫৬৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৩৫০টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৬০টি।

০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে “করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ” লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৩৬৩টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ৩৩০টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ৩০১টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫১ হাজার ৯৯৪টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৪১ হাজার ৭০টি।

করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৩৪৭ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ৯ হাজার ৪৩৬ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ২ হাজার ৪২৮ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ২৬ হাজার ১৪৮ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৫ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ হাজার ৭৫৭ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২৯ লাখ ৭১ হাজার ১০৪ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৮৮ জন এবং এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ৮৪৪ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৫ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৯৪ হাজার ২৩৭ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ১০ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৮ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৯ হাজার ৯৮৫ জন এবং এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৬ জন।সূত্র:বাসস।