২১ লাখ টাকার সেতুতে বাঁশের সাঁকো

বিধ্বস্ত সেতুর উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছে গ্রামবাসী। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

নির্মাণের দুই বছরেই ভেঙে গেছে জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু। শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার বানিয়াপাড়া সড়কের উপর নির্মিত ওই সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় ওইসব এলাকার প্রায় ২০টি গ্রামের হাজারো মানুষ এখন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের কাজ করায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে ওই সেতুটি নষ্ট হয়ে গেছে। অন্যদিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলছেন, ওই সেতুটি পুন:নির্মাণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, ত্রাণ ও পুর্নবাসন মন্ত্রণালয় ২০১১-১২ অর্থবছরে ওই সেতুটি নির্মাণ করে। এতে ব্যয় হয় ২১ লাখ টাকা। আল বেরুনী কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে। আর ওই সেতুটির দৈর্ঘ ছিল ৩০ ফুট।

স্থানীয় কৃষক তফাজ্জল মিয়া ও হোসেন আলী বলেন, উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউপির বানিয়াপাড়া হয়ে শেরপুর সদর উপজেলার কুড়ালিয়াকান্দা ও গাজীরখামার সড়কে প্রতিদিন হাজারো মানুষ যাতায়াত করে। এ সড়কের বানিয়াপাড়া অংশে নির্মিত সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় পারাপারে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফজলে রাব্বী অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের ও প্রয়োজনের তুলনায় কম সামগ্রী ব্যবহার করে। ফলে দুই বছরের মাথায় সেতুটি বিধ্বস্ত হয়। এতে মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের সাথে শেরপুর সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে ওই বিধ্বস্ত সেতুর উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছে গ্রামবাসী। এখন মাঝে মধ্যেই ওই সাঁকোতে যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে এলাকার জনসাধারণসহ কোমলমতী শিক্ষার্থীরা।

মালিঝিকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম তোতা, ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক, বানিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও জেলা পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় ওই পথে যাতায়াতকারী প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। কৃষকরা উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও গবাদী পশু পারাপারে চরম বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।

ওই সেতুটি বন্যার পানির তোরে ভেঙে গেছে জানিয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্তা ব্যক্তিরা তদন্ত করে গেছেন। এখন ওই সেতুটি পুন:নির্মাণের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ওই স্থানে একটি ৬০ ফুট দৈর্ঘের সেতুর প্রয়োজন ছিল। ত্রাণ ও পুর্নবাসন মন্ত্রণালয় ৪৫ ফুট দৈর্ঘের উপড়ে সেতু নির্মাণের অনুমোদন দেয় না। এ প্রকল্পটি এলজিইডির আওতায় নেয়া হলে কাঙ্খিত দৈর্ঘের সেতু নির্মাণ সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।