একটি বিধবা ভাতা কার্ড চান নিঃসন্তান আমেনা : শেষ সম্বল দান করেছেন একটি মসজিদের নামে

আমেনা খাতুন

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

একটি বিধবা ভাতা কার্ডের জন্য আমেনা খাতুন (৪৫) স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। আশ্বাসও পেয়েছেন। কিন্তু আজও মেলেনি সেই কাঙ্খিত ভাতা কার্ড। আমেনা সহায় সম্বলহীন। তার বাড়ি শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধিগাঁও গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত হাবেল মিয়ার স্ত্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমেনা পাঁচ বছর আগে তার শেষ সম্বল ১০ শতাংশ জমি স্থানীয় একটি মসজিদের নামে দান করে দেন। বিভিন্ন বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে জমানো ৩০ হাজার টাকায় তিনি ওই জমিটুকু কিনেছিলেন।

আমেনা জানান, ১৯৯৫ সালে তার স্বামীর মৃত্যু হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর বেশ কিছু দিন অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেছেন। এছাড়া বনবিভাগের কর্মচারীদের রান্নার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। এখন শারীরিক দুর্বলতার কারণে কাজ করতে খুব কষ্ট হয়। এছাড়া করোনার কারণে কেউ কাজে ডাকেনা। ছেলে, মেয়ে ও আত্বীয় স্বজন না থাকায় তাকে দেখভাল করার মতোও কেউ নেই।

আমেনার ভাষ্য মতে, বর্তমানে খেয়ে না খেয়ে চলছে তার দিন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পাঁচ কেজি চাল সাহায্য পেয়েছিলেন। তা দিয়ে এক সপ্তাহ কোন রকমে চলেছেন।

বিধবা ভাতা কার্ড পেতে কার সাথে যোগাযোগ করেছেন জানতে চাইলে, আমেনা বলেন গত দুই বছরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের হাতে বেশ কয়েকবার ভোটার আইডি কার্ডের কপি ও ছবি দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিধবা ভাতা কার্ড পাইনি।

ঝিনাইগাতীর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক আমির হোসেন বলেন, আমেনা খাতুন পাঁচ বছর আগে তার শেষ সম্বল ১০ শতাংশ জমি স্থানীয় গান্ধিগাঁও খরখরেপাড়া জামে মসজিদের নামে রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে দান করেছেন। আর এ কাজটি তার মাধ্যমে সম্পাদন হয়েছে। আমেনার মৃত্যুর পর ওই জমির মালিকানা পাবে মসজিদ কমিটি। জমিটিতে বর্তমানে একটি টিনের ছাপড়া ঘর রয়েছে। তিনি জানান, ৩০ হাজার টাকায় ওই জমিটুকু কিনেছিলেন আমেনা।

সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য বকুল চন্দ্র কোচ বলেন, যে পরিমান সাহায্য আসে তা দ্বিতীয় বার দেয়ার মতো সুযোগ থাকে না। অন্যদিকে আমেনার বিধবা কার্ড বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নিরুত্তর থাকেন।