জামালপুরে যৌতুকের দাবিতে বিজিবি সদস্যের স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা

সরিষাবাড়ী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিতা গৃহবধূ শারমিন সুলতানা শিখা। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

মমিনুল ইসলাম কিসমত, সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুর সদর উপজেলার তিতপল্লা ইউনিয়নে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করেছে এক বিজিবি সদস্য। গুরুতর আহত অবস্থায় গৃহবধূ শারমিন সুলতানা শিখাকে (২৪) সরিষাবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ২০ মে সকালে তিতপল্লা ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পারিবারিক সূত্র জানায়, জামালপুর সদর উপজেলার বলরামপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মমিনুর ইসলামের সাথে ২০১৩ সালে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার বালাসুতি গ্রামের সেলিম আহমেদের মেয়ে শারমিন সুলতানা শিখার বিয়ে হয়। মমিনুর তখন বেকার থাকায় মেয়েপক্ষ তাকে বিজিবিতে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার শর্তে নগদ তিন লাখ টাকা ও পাঁচ ভরি স্বর্ণালঙ্কার যৌতুক দেন। বিয়ের তিনমাস পর তার বিজিবিতে সৈনিক পদে চাকরি হয়। পুনরায় মোটরসাইকেল কিনে দিতে স্ত্রীর কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে মমিনুল।

১৩ মে সে ছুটি নিয়ে বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী শিখার কাছে দাবিকৃত মোটরসাইকেল চান। তার স্ত্রী নির্যাতনের ভয়ে কয়েকদিন সময় নেন। এর জের ধরে ২০ মে সকালে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে মমিনুর ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্ত্রী শিখাকে বেধড়ক লাঠি পেটা করেন। এ সময় শিখা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মমিনুর তাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা শিখার চিৎকারে ছুটে গেলে মমিনুর তাদের উপরও ক্ষিপ্ত হন। পরে শিখার বাবা-মা সংবাদ পেয়ে তাকে উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

নির্যাতিতা শিখার বাবা সেলিম আহমেদ বাংলারচিঠিডটকমে অভিযোগ করেন, মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে জামাইকে বিজিবির চাকরি পেতে মোটা অঙ্কের টাকা যৌতুক দিয়েছি। তারপর বাড়িঘর করার নামে এবং বিভিন্ন দাবিতে পর্যায়ক্রমে টাকা দিয়েছি নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। দিনদিন তার লোভ বাড়তে থাকায় দাম্পত্য কলহ ও মেয়ের উপর নির্যাতন বেড়ে যায়। সর্বশেষ ২০ মে শিখাকে হত্যার চেষ্টা করলে খবর পেয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করায় কোনোরকম তার প্রাণ রক্ষা পায়। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।